মিত্র মুস্তাফী বাড়ির ইতিহাস ও দুর্গা পূজা, শ্রীপুর, হুগলি
শ্যামল কুমার ঘোষ
ব্যাণ্ডেল-কাটোয়া রেলপথে জীরাট ও বলাগড় পরপর দুটি রেলস্টেশন। ব্যাণ্ডেল থেকে যথাক্রমে ষষ্ঠ ও সপ্তম স্টেশন। হাওড়া থেকে রেলপথে দূরত্ব যথাক্রমে ৬১.4 কিমি ও ৬৪.7 কিমি। দুই স্টেশনের মধ্যবর্তী একটি গ্রাম শ্রীপুর। শ্রীপুরের আগের নাম ছিল আটিশেওড়া।
শ্রীপুরের ইতিহাস 'মিত্রমুস্তৗফী' বা 'মিত্রমুস্তাফী' বংশের সঙ্গে জড়িত। এঁদের আদি নিবাস ছিল নদিয়া জেলার অন্তর্গত উলা-বীরনগর গ্রামে। উলার রামেশ্বর মিত্রমুস্তাফী ছিলেন এই বংশের প্রতিষ্ঠাতা। রামেশ্বর নবাব মুর্শিদকুলি খাঁর শাসনকালে সুবে বাংলার রাজস্ব বিভাগের মুস্তৗফী (= নায়েব কানুনগো ) পদে উন্নীত হন। এই রামেশ্বরের জ্যেষ্ঠপুত্র রঘুনন্দন ১৬৩০ শকাব্দে ( ১৭০৮ খ্রীষ্টাব্দে ) গঙ্গার পূর্বতীরের উলা গ্রাম ছেড়ে পশ্চিমতীরে আটিশেওড়া গ্রামে বসতি স্থাপন করেন এবং গ্রামের নতুন নামকরণ করেন শ্রীপুর। সেখানে রঘুনন্দন উলার বসতবাড়ির অনুকরণে গড়বেষ্টিত বাড়ি, পুকুর, চণ্ডীমণ্ডপ, মন্দির ইত্যাদি নির্মাণ করেন।
শ্রীপুরে মিত্রমুস্তাফীদের প্রতিষ্ঠিত যেকটি দেবালয় আছে তারমধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দোচালা চণ্ডীমণ্ডপটি। খড়ের চালের বদলে টিনের চাল দেওয়াতে মণ্ডপের সৌন্দর্য অনেকটাই হানি হয়েছে। বাংলার তক্ষণ শিল্পের নিদর্শন স্বরূপ এধরণের চণ্ডীমণ্ডপ সত্যই বিরল। বিভিন্ন দেবদেবীর মূর্তি, পৌরাণিক ঘটনা, সামাজিক চিত্র, নকশা ইত্যাদি চণ্ডীমণ্ডপের স্তম্ভের গায়ে, কড়িকাঠে ও ফ্রেমের উপর অজানা শিল্পীদের হাতের ছোঁয়ায় জীবন্ত রূপ পেয়েছে। প্রতি বছর দুর্গাপূজার সময় এই চণ্ডীমণ্ডপে এখনও দুর্গাপুজো অনুষ্ঠিত হয়। সঙ্গের ছবিগুলো ২০১৬ সালের দুর্গাপুজোর সময় তোলা।
মিত্রমুস্তাফীদের দোচালা চণ্ডীমণ্ডপ |
চণ্ডীমণ্ডপে কাঠের দুর্গা মূর্তি |
দুর্গা প্রতিমা - ১ |
সহায়ক গ্রন্থ :
১) পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতি : বিনয় ঘোষ
শ্রীপুরের মিত্র মুস্তাফী বাড়ির চণ্ডীমণ্ডপের কাঠের কাজ দেখতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুন :
চণ্ডীমণ্ডপ, মিত্রমুস্তাফী বাড়ি, শ্রীপুর, হুগলি
------------------------------------
১) পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতি : বিনয় ঘোষ
শ্রীপুরের মিত্র মুস্তাফী বাড়ির চণ্ডীমণ্ডপের কাঠের কাজ দেখতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুন :
চণ্ডীমণ্ডপ, মিত্রমুস্তাফী বাড়ি, শ্রীপুর, হুগলি
আমার ইমেল : shyamalfpb@gmail.com প্রয়োজনে যোগাযোগ করতে পারেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন