দশঘরা বিশ্বাস বাড়ির দুর্গাপূজা
শ্যামল কুমার ঘোষ
সংক্ষিপ্ত ইতিদাস : হুগলি জেলার ধনিয়াখালি ব্লকের অন্তর্গত দশঘরা একটি গ্রাম। এই গ্রামের বিশ্বাস পাড়ায় বিখ্যাত বিশ্বাস পরিবারের প্রতিষ্ঠাতা জগমোহন দেব বিশ্বাস বারদুয়ারী রাজবংশের রামনারায়ণ পালচৌধুরীর বদান্যতায় এখানে বসতি স্থাপন করেন। তাঁর বংশধর সদানন্দ বিশ্বাস ১৬৫১ শকাব্দে ( ১৭২৯ খ্রীষ্টাব্দে ) টেরাকোটা সমৃদ্ধ রাধাগোপীনাথের পঞ্চরত্ন শৈলীর মন্দির নির্মাণ করেন। মন্দির সংলগ্ন পাঁচ খিলানবিশিষ্ট দুর্গাদালান, রাসমঞ্চ, দোলমঞ্চ ও শিবের আটচালা মন্দির বর্তমান। দুর্গাদালানের সামনে আছে গোপীসাগর নামে একটি বড় ঝিল। গোপীসাগরের জলে বিশ্বাস বাড়ির বিভিন্ন স্থাপত্যের প্রতিবিম্ব দেখতে বেশ ভালো লাগে।
প্রতি বছর বিশ্বাস বাড়ির দুর্গাদালানে মহা সমাহারে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়। আনন্দিরাম বিশ্বাসের আমলে এই দুর্গাপূজা শুরু হয়। একচালা প্রতিমা ডাকের সাজে সজ্জিত। এ বাড়ির প্রতিমা দশভুজা নন, চতুর্ভুজা। হাতে থাকে বল্লম, সাপ, ঢাল ও তলোয়ার। দুর্গার পাশে উপরে থাকেন কার্তিক-গনেশ এবং নিচে থাকেন লক্ষ্মী-সরস্বতী।
উল্টোরথের দিন হয় প্রতিমার কাঠামো পুজো। এখানে দেবীর শাক্ত মতে পূজা হয়। বিশ্বাস বাড়িতে পশুবলি প্রথার প্রচলন আছে। আগেই বলা হয়েছে, দুর্গাদালানের পিছনে আছে টেরাকোটা সমৃদ্ধ বিখ্যাত রাধাগোপীনাথ মন্দির। মন্দিরের গর্ভগৃহে প্রতিষ্ঠিত গোপীনাথ ও রাধারানি। তাই বলির সময় গোপীনাথ ও রাধারানির কান তুলো দিয়ে বন্ধ করে শয়নে রাখা হয়।
বিশ্বাস বাড়ির পুজো দেখতে গিয়ে রাধাগোপীনাথের মন্দির দেখতে ভুলবেন না। রাধাগোপীনাথের মন্দির সম্বন্ধে জানতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুন :
রাধাগোপীনাথের মন্দির, দশঘরা, হুগলি
গোপীসাগরের জলে প্রতিবিম্ব |
তোরণদ্বারের একটি স্তম্ভ |
পাঁচ খিলানবিশিষ্ট দালানে প্রতিমা |
প্রতিমা - ২ |
প্রতিমা - ৩ |
প্রতিমা - ৪ |
কলকাতা থেকে কী ভাবে যাবেন ?
হাওড়া স্টেশন থেকে তারকেশ্বর লোকালে উঠে তারকেশ্বর স্টেশনে নামুন। সেখান থেকে বাসে বা ট্রেকারে দশঘরা বাসস্টপ। বাসস্টপ থেকে টোটোতে পৌঁছে যান বিশ্বাস পাড়ায় বিশ্বাস বাড়ি। চুঁচুড়া, গুড়াপ, ধনেখালি থেকেও দশঘরা যাওয়া যায়।
সহায়ক গ্রন্থ : হুগলি জেলার ইতিহাস ও বঙ্গসমাজ ( দ্বিতীয় খণ্ড ) : সুধীরকুমার মিত্র
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন