রবিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

Krishnanagar Rajbari Durga Puja, Krishnanagar, Nadia


কৃষ্ণনগর রাজবাড়ি দুর্গাপূজা, কৃষ্ণনগর,  নদিয়া 

                              শ্যামল কুমার ঘোষ 


            সংক্ষিপ্ত  ইতিহাস :নদিয়া জেলার সদর শহর কৃষ্ণনগর।  নদিয়ারাজের প্রতিষ্ঠাতা ভবানন্দ মজুমদারের পৌত্র রাজা রাঘব রায়  তাঁর জমিদারির প্রায় মাঝখানে, জলঙ্গী-নদীতীরের রেউই গ্রামে, চারিদিকে পরিখা খনন করে রাজধানী স্থাপন করেন। রাজা রাঘবের  পুত্র রাজা রুদ্র রায় রেউই- এর নাম পরিবর্তণ করে ভগবান  শ্রীকৃষ্ণের নামে নাম রাখেন কৃষ্ণনগর। কথিত আছে, সেই সময়  রেউই-এ অনেক গোপের বসতি ছিল এবং তাঁরা মহাসমারোহে  শ্রীকৃষ্ণের পুজো করতেন। সে কারণে তিনি এই নামকরণ করেন।  রাজা রুদ্র দিল্লীর বাদশাহ জাহাঙ্গীরের কাছ থেকে পূর্তকাজে নিপুন  এক স্থপতিকে এনে কৃষ্ণনগরে তাঁর সহায়তায় কাছারি, চক, মুসলিম  স্থাপাত্যানুগ চারমিনার সদৃশ তোরণ প্রভৃতি নির্মাণ করেন।  বিষ্ণুমহল ও পঙ্খ-অলংকৃত পূজামণ্ডপ নির্মাণ করেন মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্র।  অবশ্য পরবর্তী বিভিন্ন নদিয়ারাজের সময়ে এ সবের সংস্কার ও  নবীকরণ হয়েছে। 

            রাজবাড়ির বিরাট পূজামণ্ডপ সত্যই এক দর্শনীয় পুরাসম্পদ। পূজামণ্ডপের 'পঙ্খে'র বিচিত্র কারুকার্য অতুলনীয়। পূজামণ্ডপের  থাম, খিলান ইত্যাদিতেও রাজকীয় ছাপ লক্ষ্য করা যায়। মূল পূজার  স্থানটি বেশ বড়ো। তাকে ঘিরে সামনে-পিছনে-পাশে কয়েকটি  অলিন্দ আছে। বিভিন্ন পূজাপার্বণ উপলক্ষে যাত্রা, গান, কথকতা  প্রভৃতির আসর মূল পূজা-স্থানটির সামনের অঙ্গনে বসত। এই  ধরনের বিরাট মণ্ডপ পশ্চিমবঙ্গে আর দেখা যায় না।

            পূজামণ্ডপে প্রতি বছর মহা সমারোহে দুর্গা পূজা অনুষ্ঠিত  হয়। আগের মতো সেরকম জাঁকজমক না থাকলেও ঐতিহ্যের টানে  এখনও বহু মানুষ রাজবাড়ির পূজা দেখতে ভিড় করেন। রাজবাড়ির  দুর্গাপ্রতিমার নাম 'রাজরাজেশ্বরী'। রথের দিন প্রতিমা তৈরি শুরু হয়।  মহালয়ার দিন হোমকুণ্ড জ্বালিয়ে পূজার সূচনা হয়। একটানা নবমীর  দিন পর্যন্ত জ্বলে সেই আগুন। সপ্তমীতে সাত, অষ্টমীতে আট এবং  নবমীতে ন' রকম ভাজা সহযোগে দেবীকে ভোগ নিবেদন করা হয়।  দশমীতে জলঙ্গি নদীতে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়। সঙ্গের  ছবিগুলো ২০১৫ সালে তোলা।       
           
রাজবাড়ির প্রধান ফটক 

রাজবাড়ির পূজামণ্ডপ - ১

রাজবাড়ির পূজামণ্ডপ - ২

রাজবাড়ির পূজামণ্ডপ - ৩

রাজবাড়ির পূজামণ্ডপ - ৪

পূজামণ্ডপের 'পঙ্খে'র কাজ - ১

পূজামণ্ডপের 'পঙ্খে'র কাজ - ২

রাজবাড়ির প্রতিমা - ১

রাজবাড়ির প্রতিমা - ২

কী  ভাবে  যাবেন ?
            কৃষ্ণনগর রাজবাড়ি যেতে হলে শিয়ালদহ স্টেশন থেকে  সকালের লালগোলা প্যাসেঞ্জার বা কৃষ্ণনগর লোকালে উঠুন। নামুন  কৃষ্ণনগর স্টেশনে। স্টেশন থেকে রিকশায় / টোটোতে পৌঁছে যান  রাজবাড়ি। ৩৪ নং জাতীয় সড়ক ধরেও যেতে পারেন। 

সহায়ক গ্রন্থ :
             ১. নদিয়া জেলার পুরাকীর্তি : মোহিত রায়  ( তথ্য-সংকলন ও  গ্রন্থনা )

                        ---------------------------

রামায়ণের ৭টি খণ্ডের ৬৪ টি উপাখ্যান ও ১৮৫ টি টেরাকোটা ফলকের আলোকচিত্র সংবলিত আমার লেখা এবং 'রা প্রকাশন' কর্তৃক প্রকাশিত বই 'বাংলার টেরাকোটা মন্দিরে রামায়ণ' প্রকাশিত হয়েছে। বইটির মুদ্রিত মূল্য - ৫৯৯ টাকা। 


 বইটি ডাক যোগে সংগ্রহ করতে হলে যোগাযোগ করুন :  9038130757 এই নম্বরে। 

কলকাতার কলেজস্ট্রিটের মোড়ে দুই মোহিনীমোহন কাঞ্জিলালের কাপড়ের দোকানের মাঝের রাস্তা ১৫, শ্যামাচরণ দে স্ট্রিটের উপর অবস্থিত বিদ্যাসাগর টাওয়ারের দু'তলায় 'রা প্রকাশনে'র দোকান। ওখান থেকে বইটি সংগ্রহ করতে পারেন। কোনও অসুবিধা হলে উপরোক্ত নম্বরে ফোন করতে পারেন।

      প্রকাশনীতে বইটা বেস্টসেলার হয়েছে। 



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন