নিমপীঠ-কৈখালি ভ্রমণ
শ্যামল কুমার ঘোষ
নদী-অরণ্যের কোলে দুদিনের ছুটি কাটানোর আদর্শ জায়গা নিমপীঠ-কৈখালি। সুন্দরবনের এই বাদা অঞ্চলে শিক্ষা ও জনহিতকর কর্মে ব্রতী হয়েছে শ্রীরামকৃষ্ণ আশ্রম। এখানে যেতে হলে শিয়ালদহ দক্ষিণশাখা থেকে লক্ষ্মীকান্তপুর / নামখানা লোকাল ধরুন। নামুন মজিলপুর স্টেশনে। সময় লাগবে ১ ঘন্টা ১৫ মিনিট। নিমপীঠ শ্রীরামকৃষ্ণ আশ্রমে মধ্যাহ্ন ভোজন ( প্রসাদ ) ঠিক সাড়ে ১২ টায় মহারাজের উপস্থিতিতে মন্ত্র উচ্চারণের মধ্য দিয়ে শুরু হয়। তাই সকাল ৭ টা ১৫ মি. বা তার আগের ট্রেন ধরতে পারলে ভাল হয়। তাতে মধ্যাহ্ন ভোজনের আগে নিমপীঠে ঘুরতে অনেকটা সময় পাওয়া যাবে। যাঁরা গাড়িতে যেতে চান তাঁদের পথ ই-এম বাইপাস - কামালগাছি - বারুইপুর লেবেল ক্রসিং - দক্ষিণ বারাসত - জয়নগর -নিমপীঠ -জামতলা -কৈখালি। কৈখালির অতিথি নিবাসে গাড়ি রাখার ব্যবস্থা আছে।
জয়নগর স্টেশন থেকে অটোতে পৌঁছে যান নিমপীঠ শ্রীরামকৃষ্ণ আশ্রমে। আশ্রমের উষ্ণ অভ্যর্থনা অবশ্যই আপনাকে মুগ্ধ করবে। প্রথমেই অফিসে রিপোর্ট করুন এবং নির্দিষ্ট দক্ষিণার বিনিময়ে দুপুরের আহারের কুপন সংগ্রহ করুন। তারপর আশ্রমের অতিথি নিবাসে বিশ্রাম ও স্নান সেরে শ্রীরামকৃষ্ণের মন্দির, মায়ের মন্দির ও নিমপীঠ আশ্রমের নানা কর্মকাণ্ড দেখে নিন। দুপুরের আহার ( প্রসাদ ) গ্রহণ করে বেরিয়ে পড়ুন কৈখালির উদ্দেশ্যে।
কৈখালিতে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের একটি পর্যটক আবাস আছে। এখানকার পরিচালনার ভার আশ্রম কর্তৃপক্ষের উপর ন্যস্ত। তাই আগেই ফোন করে দু দিনের জন্য এই অতিথি নিবাস বুক করুন ( ফোন নং- ০৩২১৮২২৬০০১)। নিমপীঠ থেকে কৈখালি একবারে যেতে হলে অবশ্যই অটো রিজার্ভ করতে হবে। তা না হলে জামতলা পর্যন্ত অটো বা ট্রেকারে চলে যান। সেখান থেকে অটোতে বা যন্ত্রচালিত ভ্যান রিকশায় পৌঁছে যান কৈখালি।
জন কোলাহল মুক্ত ও গাছ-গাছালিতে ভরা কৈকালির একপাশ দিয়ে বয়ে চলেছে মাতলা নদী। মনে করলে লঞ্চে মাতলার অপর পাড়ে রয়ালবেঙ্গলের দেশে পৌঁছে যেতে পারেন। মাতলার বুকে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখুন আর বুকভরে দূষণমুক্ত বাতাস টেনে ফুসফুসটাকে খানিকটা সতেজ করুন। আশে পাশের গ্রাম ঘুরে দেখুন। জেলেদের নৌকা থেকে নদী তটে মাছ নামানো দেখুন। কৈখালিতে শ্রীরামকৃষ্ণের মন্দির অবশ্যই দেখে নিন। ইচ্ছা হলে ভুটভুটিতে চেপে মাতলার চরে গজিয়ে ওঠা গ্রামে চলে যান। সেখানে আধুনিক সভ্যতা থেকে দূরে থাকা গ্রাম্য জীবনযাত্রা দেখে নিন। আর অবশ্যই লঞ্চে করে দেখুন ঝড়খালি। নদীর বুকে লঞ্চ ভ্রমণ হবে এক অপূর্ব-অনিন্দ্যসুন্দর অভিজ্ঞতা। ঝাড়খালিতে যাওয়ার জন্য লঞ্চ রিজার্ভ করতে হবে। আপনার সঙ্গের লোকসংখ্যা যদি কম হয় তবে অন্য বড় দল খুঁজে নিন।
ঝড়খালিতে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের একটি বন্যপ্রাণী পার্ক ও প্রজাপতি বাগান তৈরি হয়েছে। এখানে নানান রঙের প্রজাপতি ও দুটি বাঘ দেখতে পাবেন। ঝড়খালিতে কয়েক ঘন্টা কাটাতে ভালই লাগবে। তৃতীয় দিনে মধ্যাহ্ন ভোজনের পর অটোতে সোজা জয়নগর স্টেশনে চলে যান। কৈখালিতে অতিথি নিবাসে থাকা-খাওয়ার চার্জ জনপ্রতি ৪৫০ টাকা প্রতিদিন ( ডিসেম্বর ২০১৪ ) এবং দুজনের জন্য একটি ঘর দেওয়া হয়। খাবার পর্যাপ্ত ও ভাল।
দুদিনের এই ভ্রমণ শেষে তাজা মন নিয়ে আপনার কর্মস্থলে ফিরুন।
********
Lonch kivabe vara korbo...rate koto kindly bolte parben?
উত্তরমুছুন