শুক্রবার, ৩ আগস্ট, ২০১৮

Adhar Lal sen Bari History and Durga Puja, Kolkata


অধরলাল  সেন  বাড়ির  ইতিহাস  ও  দুর্গা  পূজা  
            
             শ্যামল  কুমার  ঘোষ 

            কলকাতার  বারোয়ারি  পুজোতে  'কর্পোরেট'  হস্তক্ষেপের  পর  দুর্গাপুজোতে  এল  এক  আমূল  পরিবর্তন।  ক্লাবগুলোর  মধ্যে  শুরু  হল  সুস্থ  প্রতিযোগিতা।  শুরু  হল  থিমের  পুজো।  

            প্রতি  বছর  ক্লাবগুলোর  নতুন  নতুন  থিম  দেখতে  রাস্তায়  মানুষের  ঢল  নামে।  এখন  তো  মহালয়া  থেকেই  শুরু  হয়  ঠাকুর  দেখা।  এই  সব  পুজোতে  পুজোটা  হয়  গৌণ।  কিন্তু  এই বারোয়ারি  পুজোর  বাইরে  আর  এক  রকম  পুজো  হয় কলকাতার  বনেদি  বাড়িগুলোর  থামওয়ালা  ঠাকুরদালানে।  এই  সব  বাড়ির পুজো  কোনটা  একশ  বছরের  পুরানো।  কোনটা  আবার  দু-তিনশ,  এমন  কি  চারশ  বছরেরও  বেশি  পুরানো।  এই  সব  বাড়ির  পুজোর  সঙ্গে  জড়িয়ে  আছে  কিংবদন্তি,  ইতিহাস আর  পরম্পরা।  এখন  হয়তো  আগের  মত  সেই  চোখ-ধাঁধানো জৌলুস  নেই,  ঠিকই।  কিন্তু  এই  সব  বাড়িতে  পুজো  হয় অতীতের  পরম্পরা  মেনে,  নিষ্ঠা  সহকারে।  বাড়ির  বেশির  ভাগ  সভ্য-সভ্যারা  কলকাতার  অন্যত্র,  বাংলার  বাইরে  এমন  কি বিদেশেও  থাকেন।  তাঁরা  পুজো  উপলক্ষ্যে  এক  সঙ্গে  মিলিত হন।  এই  সব  বাড়ির  সাবেকি  পুজোতে  উপস্থিত  হলে  আপনি হয়তো  পৌঁছে  যাবেন  সুদূর  অতীতে।  আজ  অধরলাল  সেন  বাড়ি। 

অধরলাল  সেন  বাড়ি
   ৯৬ এ  এবং  ৯৭ বি,  বেনিয়াটোলা  স্ট্রিট।  ( বি.  কে.  পাল  এভিনিউ  ও  রবীন্দ্র  সরণির  সংযোগস্থলের  কাছে। )  এখানে  এখন  দুটি  বাড়িতে  পুজো  হয়।  ৯৭ বি  বাড়িটির  পুজো  প্রাচীন 

    সংক্ষিপ্ত  ইতিহাস :
            অধরলাল সেন ( ১৮৫৫-৮৫)  ছিলেন  শ্রীরামকৃষ্ণের  প্রিয়  গৃহীভক্তদের  অন্যতম।  ঠাকুর  শ্রীরামকৃষ্ণের  সঙ্গে  তাঁর  প্রথম  সাক্ষাৎ  হয়  দক্ষিণেশ্বরে।  তাঁর  পিতা  রামগোপাল  সেন  ছিলেন  পরম  বৈষ্ণব।  তিনি  ধনী  ব্যবসায়ী  ছিলেন।  তাঁদের  আদি  নিবাস  ছিল  হুগলি  জেলার  সিঙ্গুর  গ্রামে।  অধরের  জন্মস্থান - ২৯, শঙ্কর  হালদার  লেন,  আহিরীটোলা,  কলকাতা।  অধর  ছিলেন  ডেপুটি  ম্যাজিস্ট্রেট।  তিনি  কলিকাতা  বিশ্ববিদ্যালয়ের  fellow  এবং  Faculty  of  Arts - এর  সদস্য  ছিলেন।  তিনি  ছিলেন  পাঁচখানি  বাংলা  কাব্য  গ্রন্থের  প্রণেতা।  প্রথম  জীবনে  নাস্তিক  অধর,  পরে  ঠাকুরকে  দর্শন  করে  ঠাকুরের  প্রেমভক্ত  হন।  শ্রীরামকৃষ্ণ  অধরলালের  অনুরোধে  প্রতিমা  দেখতে  আসেন  এই  বাড়িতে।  অধরলালের  সহকর্মী  ছিলেন  বঙ্কিমচন্দ্র।  ঠাকুর  রামকৃষ্ণের  সঙ্গে  বঙ্কিমচন্দ্রের  সাক্ষাৎ  হয়  এই  বাড়িতে।  ত্রিশ  বৎসর  বয়সে  তিনি  হটাৎ  একদিন  ঘোড়ার  পিঠ  থেকে  পড়ে  মারা  যান।  রামকৃষ্ণ  তাঁকে  দেখতে  এসে  অশ্রুসজল  চোখে  তাঁকে  স্পর্শ  করেন।           

            অধরলালের  পিতা  রামগোপাল  সেন  ১৮৫৯  খ্রীষ্টাব্দে  এই  বাড়িতে  দুর্গাপুজো  শুরু  করেন। পুজো  হয়  বৈষ্ণব  মতে।  অষ্টমীতে  কুমারী  পুজো  হয়।   

৯৭ বি,  বেনিয়াটোলা  স্ট্রিট  বাড়ির  প্রতিমার  ছবি ( ২০১৭ সালে  তোলা ) :


প্রতিমা 

৯৬ এ ,  বেনিয়াটোলা  স্ট্রিট  বাড়ির  প্রতিমার  ছবি ( ২০১৭ সালে  তোলা ) :

প্রতিমা - ১

প্রতিমা - ২

                         ---------------------------

রামায়ণের ৭টি খণ্ডের ৬৪ টি উপাখ্যান ও ১৮৫ টি টেরাকোটা ফলকের আলোকচিত্র সংবলিত আমার লেখা এবং 'রা প্রকাশন' কর্তৃক প্রকাশিত বই 'বাংলার টেরাকোটা মন্দিরে রামায়ণ' প্রকাশিত হয়েছে। বইটির মুদ্রিত মূল্য - ৫৯৯ টাকা।


 বইটি ডাক যোগে সংগ্রহ করতে হলে যোগাযোগ করুন :  9038130757 এই নম্বরে। 

কলকাতার কলেজস্ট্রিটের মোড়ে দুই মোহিনীমোহন কাঞ্জিলালের কাপড়ের দোকানের মাঝের রাস্তা ১৫, শ্যামাচরণ দে স্ট্রিটের উপর অবস্থিত বিদ্যাসাগর টাওয়ারের দু'তলায় 'রা প্রকাশনে'র দোকান। ওখান থেকে বইটি সংগ্রহ করতে পারেন। কোনও অসুবিধা হলে উপরোক্ত নম্বরের যে কোনো একটিতে ফোন করতে পারেন।

      প্রকাশনীতে বইটা বেস্টসেলার হয়েছে। 



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন