সোমবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০১৮

Bonedi Bari Durga Puja, Nadia



বনেদি  বাড়ির  দুর্গাপূজা, নদিয়া 

শ্যামল  কুমার  ঘোষ 



কৃষ্ণনগর  রাজবাড়ি  দুর্গাপূজা,  কৃষ্ণনগর,  নদিয়া 

সংক্ষিপ্ত  ইতিহাস :নদিয়া  জেলার  সদর  শহর  কৃষ্ণনগর।  নদিয়ারাজের  প্রতিষ্ঠাতা  ভবানন্দ  মজুমদারের  পৌত্র  রাজা  রাঘব  রায়  তাঁর  জমিদারির  প্রায়  মাঝখানে,  জলঙ্গী-নদীতীরের  রেউই  গ্রামে,  চারি  দিকে  পরিখা  খনন  করে  রাজধানী  স্থাপন  করেন।রাজা  রাঘবের   পুত্র  রাজা  রুদ্র  রায়  রেউই- এর  নাম  পরিবর্তণ  করে  ভগবান  শ্রীকৃষ্ণের  নামে  নাম  রাখেন  কৃষ্ণনগর।  কথিত  আছে,  সেই সময়  রেউই-এ  অনেক  গোপের  বসতি  ছিল  এবং  তাঁরা  মহাসমারোহে  শ্রীকৃষ্ণের  পুজো  করতেন।  সে  কারণে  তিনি  এই  নামকরণ  করেন।  রাজা  রুদ্র  দিল্লীর  বাদশাহ  জাহাঙ্গীরের  কাছ  থেকে  পূর্তকাজে  নিপুন  এক  স্থপতিকে  এনে  কৃষ্ণনগরে  তাঁর  সহায়তায়  কাছারি,  চক,  মুসলিম  স্থাপাত্যানুগ  চারমিনার  সদৃশ  তোরণ  প্রভৃতি  নির্মাণ  করেন।  বিষ্ণুমহল  ও  পঙ্খ-অলংকৃত  পূজামণ্ডপ  নির্মাণ  করেন  মহারাজা  কৃষ্ণচন্দ্র।  অবশ্য  পরবর্তী  বিভিন্ন  নদিয়ারাজের  সময়ে  এ  সবের  সংস্কার  ও  নবীকরণ  হয়েছে। 

            রাজবাড়ির  বিরাট  পূজামণ্ডপ  সত্যই  এক  দর্শনীয়  পুরাসম্পদ। পূজামণ্ডপের  'পঙ্খে'র  বিচিত্র  কারুকার্য  অতুলনীয়। পূজামণ্ডপের  থাম,  খিলান  ইত্যাদিতেও  রাজকীয়  ছাপ  লক্ষ্য  করা  যায়।  মূল  পূজার  স্থানটি  বেশ  বড়।  তাকে  ঘিরে  সামনে-পিছনে-পাশে  কয়েকটি  অলিন্দ  আছে।  বিভিন্ন  পূজাপার্বণ  উপলক্ষে  যাত্রা,  গান,  কথকতা  প্রভৃতির  আসর  মূল  পূজা-স্থানটির  সামনের  অঙ্গনে  বসত।  এই  ধরনের  বিরাট  মণ্ডপ  পশ্চিমবঙ্গে  আর  দেখা  যায়  না।

            পূজামণ্ডপে  প্রতি  বছর  মহা  সমারোহে  দুর্গা  পূজা  অনুষ্ঠিত  হয়।  আগের  মত  সেরকম  জাঁকজমক  না  থাকলেও  ঐতিহ্যের  টানে  এখনও  বহু  মানুষ  রাজবাড়ির  পূজা  দেখতে  ভিড়  করেন।  রাজবাড়ির  দুর্গাপ্রতিমার  নাম  'রাজরাজেশ্বরী'।   রথের  দিন  প্রতিমা  তৈরী  শুরু  হয়।  মহালয়ার  দিন  হোমকুন্ড  জ্বালিয়ে  পূজার  সূচনা  হয়।  একটানা নবমীর  দিন  পর্যন্ত  জ্বলে  সেই  আগুন।  সপ্তমীতে  সাত,  অষ্টমীতে  আট  এবং  নবমীতে  ন'  রকম  ভাজা  সহযোগে  দেবীকে  ভোগ  নিবেদন  করা  হয়।  দশমীতে  জলঙ্গি  নদীতে  প্রতিমা  বিসর্জন  দেওয়া  হয়।  
            
            কৃষ্ণনগর  রাজবাড়ি  যেতে  হলে  শিয়ালদহ  স্টেশন  থেকে  সকালের  লালগোলা  প্যাসেঞ্জার  বা  কৃষ্ণনগর  লোকালে  উঠুন।  নামুন  কৃষ্ণনগর  স্টেশনে।  স্টেশন  থেকে  রিকশায়  পৌঁছে  যান  রাজবাড়ি।  ৩৪ নং জাতীয় সড়ক  ধরেও  যেতে  পারেন। 

সঙ্গের  ছবিগুলো  ২০১৫  সালে  তোলা। 


রাজবাড়ির  প্রধান  ফটক

রাজবাড়ির  পূজামণ্ডপ - ১

রাজবাড়ির  পূজামণ্ডপ - ২

রাজবাড়ির  পূজামণ্ডপ - ৩

রাজবাড়ির  পূজামণ্ডপ - ৪

পূজামণ্ডপের  'পঙ্খে'র  কাজ - ১

পূজামণ্ডপের  'পঙ্খে'র  কাজ - ২

রাজবাড়ির  প্রতিমা - ১

       
বীরনগর  মিত্র  মুস্তাফি  বাড়ির  দুর্গাপূজা,  বীরনগর,  নদিয়া

            শিয়ালদহ-কৃষ্ণনগর  রেলপথে  বীরনগর  একটি  স্টেশন।  কলকাতা  থেকে  রেলপথে  দূরত্ব  ৮১.৬  কিমি।  বীরনগর  স্টেশন  থেকে  ২  কিমি পূর্ব  দিকে  উলার  মুস্থাফি পাড়া।  এই  পাড়ার মিত্র  মুস্থাফিদের  রাধাকৃষ্ণের  জোড়বাংলা  মন্দিরটি   বিখ্যাত।  

            বীরনগরের  প্রাচীন  নাম  উলা।  উলা  নামকরণ  সম্পর্কে  নানান  লোকশ্রুতি  প্রচলিত  আছে।  উলুবন  পরিষ্কার  করে  প্রথম  বসতি  স্থাপিত  হয়  বলে  নাম  হয়  উলা।  আবার  অনেকে  বলেন  এই  গ্রামের  প্রাচীন  ও  বিখ্যাত  দেবতা  উলাই  চণ্ডীর  নামানুসারে  নাম  হয়  উলা।  এখানে  একসময়  গ্রামবাসীদের  চেষ্টায়  এক  দুর্ধর্ষ  ডাকাতদল  ধরা  পড়লে  ইংরেজ  সরকার  উলার  নতুন  নামকরণ  করেন  বীরনগর  অর্থাৎ  বীরদের  নগর। 

            উলার  প্রাচীন  জমিদার  মুস্তৌফি  বংশের  প্রতিষ্ঠাতা  রামেশ্বর  মিত্র  মুর্শিদকুলী  খাঁর  রাজত্বকালে  বাংলার  মুস্তৌফি (= নায়েব  কানুনগো ) পদে  নিযুক্ত  হন।  

            মিত্র  মুস্তাফিদের  কাঠের  তৈরি  কারুকার্যশোভিত  একটি  দুর্গামণ্ডপ  ছিল।  শোনা  যায়  সেই  সময়  এই  দুর্গামণ্ডপটি  দেখার  জন্য  বাংলার  বিভিন্ন  স্থান  থেকে  অনেক  লোক  এখানে  হাজির  হত।  অনেক  দিন  হল  সেটি  একপ্রকার  বিনষ্ট।  শুধু  কাঠের  ওপর  খোদাই  করা  কয়েকটি  থাম  বা  কড়ি  এখন  অবশিষ্ট  আছে।  কীটপতঙ্গের অত্যাচারে  সেগুলিও  এখন  জীর্ণ-দীর্ণ।  নতুন  করে  দুর্গামণ্ডপটি  নির্মাণ  করা হয়েছে।  বর্তমানে  এই  নতুন  দুর্গামণ্ডপে  দুর্গাপূজা  অনুষ্ঠিত  হয়। 
                        
            মুস্থাফি  বাড়ি  যেতে  হলে  শিয়ালদহ  থেকে  লালগোলা  প্যাসেঞ্জার  বা  কৃষ্ণনগর  লোকালে  উঠুন।  নামুন  বীরনগর  স্টেশনে।  স্টেশনের  পূর্ব  দিক  থেকে  টোটো  বা  রিকশায়  উঠে  পৌঁছে  যান  মুস্থাফি  বাড়ি।

সঙ্গের ছবিগুলো  ২০১৮  সালের  অষ্টমীর  দিন  তোলা।

প্রতিমা - ১

প্রতিমা - ২

প্রতিমা - ৩

প্রতিমা - ৪


রানাঘাট  পাল  চৌধুরী  বাড়ির  দুর্গাপূজা,  রানাঘাট,  নদিয়া    
                                             
             সংক্ষিপ্ত  ইতিহাস :  নদিয়া  জেলার  মহকুমা  শহর  রানাঘাট।  রানাঘাটের  জমিদারদের  অন্যতম  'পাল  চৌধুরী'  বংশ।  'পাল  চৌধুরী'  নদিয়ারাজ  কর্তৃক  প্রদত্ত  উপাধি।  এই  বংশের  পূর্বপুরুষ  কৃষ্ণ  চন্দ্র  পান্তি  অতি  সাধারণ  অবস্থা  থেকে  নিজের  চেষ্টায়  প্রচুর  ভূসম্পত্তির  অধিকারী  হন।  কথিত  আছে,  একবার  আড়ংঘাটার  যুগলকিশোর  মন্দিরের  ধানের  গোলা  আগুনে  পুড়ে  গেলে  কৃষ্ণ  পান্তি  খুব  কম  দামে  ওই  গোলা  কিনে  নেন।  কৃষ্ণ  পান্তি  ওই  ধান  বিক্রি  করে  প্রচুর  লাভ  করেন।  কারণ  গোলার  ধান  উপরের  দিকের  সামান্যই  পুড়ে  ছিল,  কিন্তু  নিচের  ধান  ভালই  ছিল।  সেই  থেকেই  তাঁদের  বিপুল  বৈভবের  শুরু।   যশোরের  অন্তর্গত  সাঁতোরে  তাঁদের  জমিদারি  ছিল।  স্কুল  প্রতিষ্ঠা  ও  অন্যান্য  কাজে  পাল  চৌধুরীদের  অনেক  অবদান  আছে।  পাল  চৌধুরী  পরিবারের  এখন  সে  বৈভব  না  থাকলেও  এখনও  তাঁদের  পাঁচ  খিলানযুক্ত  ঠাকুরদালানে  দুর্গা  পূজা  অনুষ্ঠিত  হয়। 

            রানাঘাটের  পাল  চৌধুরী  বাড়ি  যেতে  হলে  শিয়ালদহ থেকে  লালগোলা  পাসেঞ্জার,  রানাঘাট,  শান্তিপুর,  গেদে  বা  কৃষ্ণনগর  লোকালে  উঠুন।  নামুন  রানাঘাটে।  স্টেশন  থেকে  রিকশায়  বা  টোটোতে  পৌঁছে  যান  পাল  চৌধুরী  বাড়ি।  রানাঘাট  থেকে  কৃষ্ণনগর,  লালগোলা,  শান্তিপুর,  গেদে,  বনগাঁ  ও  শিয়ালদেহের  ট্রেন  পাওয়া  যায়।  ৩৪  নং  জাতীয়  সড়ক  ধরেও  রানাঘাট  যেতে  পারেন।  শিয়ালদহ  থেকে  রানাঘাট  যেতে  ট্রেনে  সময়  লাগে  দু  ঘন্টা। 

নিচের  ঠাকুরদালানের  ছবিটি  ২০১৬  সালে  তোলা।  অন্যান্য   ছবিগুলো  ২০১৮  সালের  অষ্টমীর  দিন  তোলা। 


ঠাকুরদালান 

দূর্গা  প্রতিমা - ১

দূর্গা  প্রতিমা - ২

দূর্গা  প্রতিমা - ৩

দূর্গা  প্রতিমা - ৪

রানাঘাট  দে চৌধুরী  বাড়ির  দুর্গাপূজা,  রানাঘাট,  নদিয়া

            সংক্ষিপ্ত  ইতিহাস : রানাঘাটের  পাল  চৌধুরী  পরিবারের  সঙ্গে  দে  চৌধুরী  পরিবারের  নাম  উল্লেখ  না  করলে  রানাঘাটের  ইতিহাস  সম্পন্ন  হয়  না।  যে  সময়ে  রানাঘাটের  পাল  চৌধুরী  বাড়ির  কৃষ্ণপান্তি  ব্যবসা  করে  উন্নতি  সাধন  করেন  ঠিক  সেই  সময়েই  রানাঘাটের  দে  চৌধুরী  পরিবারের  পূর্বপুরুষ  রামসুখ  দে  চৌধুরী  ব্যবসা  দ্বারা  নিজের  উন্নতি  সাধন  করেন।  এখন  রানাঘাটের  বড়বাজারের  যেখানে  মদনমোহন  মন্দির  ঠিক  সেখানে  তাঁর  প্রথম  দোকান  ছিল।  পরে  ব্যবসার  উন্নতির  সঙ্গে  সঙ্গে  মালদহ,  হাটখোলা  প্রভৃতি  অঞ্চলে  গদি  বাড়ি  নির্মাণ  করে  বৃহৎ  আকারে  ব্যবসা  শুরু  করেন।  মালদহের  গদি  থেকে  তিনি  ব্যবসায়  প্রভূত  উন্নতি  সাধন  করেন  এবং  সেই  ব্যবসার  টাকা  থেকে  জমিদারি  কেনেন।  এঁদের  আগের  বসত  বাড়ি  নদী  ভাঙ্গনের  কবলে  পড়লে  ১১৯৮  বঙ্গাব্দে  বর্তমান  ঠিকানায়  বসত  বাড়ি  নির্মাণ  করেন। 

           এই  বংশের  স্থাপয়িতা  রামসুখ  কেবল  লক্ষ্মীবন্ত  পুরুষ  ছিলেন  না,  তিনি  অতিশয়  ধার্মিকও  ছিলেন।  তিনি  সারা  জীবন  'বার  মাসে  তের  পার্বণ'  ও  অতিথি  সেবা  করে  গেছেন।  এই  বংশে  দাতারাম,  লক্ষ্মীকান্ত,  শ্রীনাথ,  রাধাময়,  রামলাল  ও  পূর্ণচন্দ্র  দে  চৌধুরীর  নাম  উল্লেখযোগ্য।  রাধাময়  'নবোপাখ্যান'  নামক  সামাজিক  নকসা  রচনা  করেন।  সেকালে  'বাবু'  বলতে  রানাঘাটে  রামলাল  দে  চৌধুরীকেই  বোঝাত।  পূর্ণচন্দ্র  রানাঘাটের  নানা  লোক  হিতকর  কাজের  প্রধান  উদ্যোগী  ছিলেন।  

সঙ্গের ছবিগুলো  ২০১৮  সালের  অষ্টমীর  দিন  তোলা।

বাড়ির ফটক 

ঠাকুরদালান 

প্রতিমা - ১

প্রতিমা - ২

প্রতিমা - ৩

রানাঘাট  ঘটক  বাড়ির  দুর্গাপূজা,  রানাঘাট,  নদিয়া

সঙ্গের ছবিগুলো  ২০১৮  সালের  অষ্টমীর  দিন  তোলা।
প্রতিমা - ১

প্রতিমা - ২

প্রতিমা - ৩

কুমারী পূজা - ১

কুমারী পূজা - ২

শান্তিপুর   বড়  গোস্বামী  বাড়ির  দুর্গা  পূজা , শান্তিপুর, নদিয়া
                                                         
              সংক্ষিপ্ত  ইতিহাস :  বৈষ্ণব  চূড়ামণি  শ্রীঅদ্বৈতাচার্যের  সাধনক্ষেত্র  শ্রীধাম  শান্তিপুর।  কথিত  আছে,  প্রায়  সাড়ে  পাঁচশো  বছর  আগে  পিতৃ-মাতৃ  বিয়োগের  পর  শ্রীঅদ্বৈতাচার্য  ভারত  ভ্রমণে  বেড়িয়ে  বর্তমান  নেপালের  গণ্ডকী  নদী  থেকে  এক  পবিত্র  নারায়ণ  শিলা  পান।  সেই  নারায়ণ  শিলা  তিনি  পরম  শ্রদ্ধায়  তাঁর  শান্তিপুরের  বাড়িতে  এনে  নিত্যসেবা  করতে  থাকেন।  অপ্রকট  হওয়ার  আগে  তিনি  সেই  নারায়ণ  শিলার  পূজার্চনার  ভার  তাঁর  প্রিয়  পুত্র  বলরামের  হাতে  অর্পণ  করেন।  পরে  বলরাম ওই  নারায়ণ  শিলার  পূজার্চনার  দায়িত্ব  দেন  জ্যেষ্ঠ  পুত্র  মথুরেশের  হাতে।  সেই  থেকেই  বংশ  পরম্পরায়  বড়  গোস্বামী  বাড়িতে  পূজিত  হচ্ছেন  অদ্বৈতপ্রভু  প্রতিষ্ঠিত  নারায়ণ  শিলা।  শ্রীঅদ্বৈতপ্রভুর  পৌত্র  মথুরেশ  গোস্বামীর  জ্যেষ্ঠ  পুত্র  রাঘবেন্দ্রের  বাড়ি  হিসাবে  পরবর্তী  কালে  এই  বাড়ি  'বড়  গোস্বামী  বাড়ি'  নামে  খ্যাত  হয়।

              বড়  গোস্বামী  বাড়িতে  শ্রীশ্রী রাধারমণ  বিগ্রহ  এক  দালান  মন্দিরে  প্রতিষ্ঠিত।  উৎকলীয়  ভাস্কর্যরীতির  এই  বিগ্রহটি  প্রথমে  উড়িষ্যারাজ  ইন্দ্রদ্যুম্ন  কর্তৃক  দোলগোবিন্দ  (একক  কৃষ্ণমূর্তি )  নামে  পুরীধামে  প্রতিষ্ঠিত  হয়।  যশোহর  রাজ  প্রতাপাদিত্য  তাঁর  খুল্লতাত  বসন্ত  রায়ের  আদেশে  পুরী  থেকে  সেটিকে  যশোহরে  নিয়ে  এসে  প্রতিষ্ঠা   করেন।  শান্তিপুরের  মথুরেশ  ছিলেন  এই  বিগ্রহের  পুরোহিতের  গুরু।  মানসিংহের  যশোহর  আক্রমণের  সময়  মথুরেশ  সেখানে  উপস্থিত  ছিলেন।  তিনি  বিগ্রহটিকে  শান্তিপুরে  নিয়ে  এসে  নিজগৃহে  নবরূপে  'রাধারমণ'  নামে  প্রতিষ্ঠা  করেন।  মথুরেশ  তিন  বিগ্রহ  তিন  পুত্রকে  দেন ;  শ্রীশ্রী  রাধারমণ  রাঘবেন্দ্রকে,  শ্রীশ্রী  রাধাবিনোদ  ঘনশ্যামকে  এবং  শ্রীশ্রী  রাধাবল্লভ  রামেশ্বরকে।  মুকুন্দদেবের  ( রাঘবেন্দ্র  পুত্র )  পুত্র  ব্রজকিশোরের  সময়  এই  বিগ্রহ  অপহৃত  হয়।  দিগনগরের  ঘোলার  বিলে  অপহৃত  বিগ্রহ  পাওয়া  যায়।  কৃষ্ণনগরের  রাজবাড়িতে  নিদর্শন  দেখিয়ে  বিগ্রহ  ফিরিয়ে  এনে  পুনরায়  প্রতিষ্ঠা  করা  হয়।  'কাত্যায়নী'  পূজার  অনুকরণে  সেই  সময়  বড়  গোস্বামী  বাড়িতে  দুর্গাপূজার  প্রবর্তন  হয়।  এখনও  প্রতি  বছর  বাড়ির  দুর্গাদালানে  দুর্গা  পুজো  অনুষ্ঠিত  হয়।  বাড়ির  প্রতিমার  বিশেষত্ব  দুর্গা  প্রতিমার  দুটি  হাত  অন্য  হাতগুলির  অপেক্ষা  বড়।  
            শান্তিপুরের  বড়  গোস্বামী  বাড়িতে  যেতে  হলে  শিয়ালদহ  থেকে  শান্তিপুর  লোকাল  ধরুন।  রেলপথে  শান্তিপুরের  দূরত্ব  ৯৩  কি মি।  ট্রেনে  সময়  লাগে  ঘন্টা  আড়াই। স্টেশন  থেকে  রিকশায়  বা  টোটোতে  পৌঁছে  যান  বড়  গোস্বামী  বাড়ি।  ৩৪ নং  জাতীয়  সড়ক  শান্তিপুরের  ওপর  দিয়ে  গেছে।  তাই  বাসে  বা  গাড়িতেও  যেতে  পারেন।

            সঙ্গের  ছবিগুলো  ২০১৮  সালের  অষ্টমীর  দিন  তোলা। 


বড় গোস্বামী বাড়ির তোরণপথ 
বড় গোস্বামী বাড়ির ফটক 
বাড়ির দুর্গাদালান

প্রতিমা - ১

প্রতিমা - ২

প্রতিমা - ৩
    
শান্তিপুর   বড়  চাদুনি  বাড়ির  দুর্গাপূজা, শান্তিপুর, নদিয়া


            শান্তিপুরের  বড়  চাদুনি  বাড়িতে  যেতে  হলে  শিয়ালদহ  থেকে  শান্তিপুর  লোকাল  ধরুন।  রেলপথে  শান্তিপুরের  দূরত্ব  ৯৩  কি মি।  ট্রেনে  সময়  লাগে  ঘন্টা  আড়াই। স্টেশন  থেকে  রিকশায়  বা  টোটোতে  পৌঁছে  যান  বড়  চাদুনি  বাড়ি।  ৩৪ নং  জাতীয়  সড়ক  শান্তিপুরের  ওপর  দিয়ে  গেছে।  তাই  গাড়িতেও  যেতে  পারেন।

সঙ্গের  ছবিগুলো  ২০১৮  সালের  অষ্টমীর  দিন  তোলা। 


প্রতিমা - ১

প্রতিমা - ২

প্রতিমা - ৩


শান্তিপুর
   ঘর  চাদুনি  বাড়ির  দুর্গাপূজা, শান্তিপুর, নদিয়া

            শান্তিপুরের  ঘর  চাদুনি  বাড়িতে  যেতে  হলে  শিয়ালদহ  থেকে  শান্তিপুর  লোকাল  ধরুন।  রেলপথে  শান্তিপুরের  দূরত্ব  ৯৩  কি মি।  ট্রেনে  সময়  লাগে  ঘন্টা  আড়াই। স্টেশন  থেকে  রিকশায়  বা  টোটোতে  পৌঁছে  যান  ঘর  চাদুনি  বাড়ি।  ৩৪ নং  জাতীয়  সড়ক  শান্তিপুরের  ওপর  দিয়ে  গেছে।  তাই  গাড়িতেও  যেতে  পারেন।

সঙ্গের  ছবিগুলো  ২০১৮  সালের  অষ্টমীর  দিন  তোলা।


প্রতিমা - ১

প্রতিমা - ২

প্রতিমা - ৩


শান্তিপুর
   মৈত্র  বাড়ির  দুর্গাপূজা, শান্তিপুর, নদিয়া

            শান্তিপুরের  মৈত্র  বাড়িতে  যেতে  হলে  শিয়ালদহ  থেকে  শান্তিপুর  লোকাল  ধরুন।  রেলপথে  শান্তিপুরের  দূরত্ব  ৯৩  কি মি।  ট্রেনে  সময়  লাগে  ঘন্টা  আড়াই। স্টেশন  থেকে  রিকশায়  বা  টোটোতে  পৌঁছে  যান  মৈত্র  বাড়ি।  ৩৪ নং  জাতীয়  সড়ক  শান্তিপুরের  ওপর  দিয়ে  গেছে।  তাই  গাড়িতেও  যেতে  পারেন।


সঙ্গের  ছবিগুলো  ২০১৮  সালের  অষ্টমীর  দিন  তোলা।

মৈত্র বাড়ির দরজা 

ঠাকুর দোলান 

প্রতিমা - ১

প্রতিমা - ২

প্রতিমা - ৩

প্রতিমা - ৪

    সহায়ক  গ্রন্থাবলি  :

১. নদিয়া  জেলার  পুরাকীর্তি :  মোহিত  রায়  ( তথ্য  সংকলন  ও  গ্রন্থনা )
২. Nadia Gazetteer - Chapter XVI
৩. শান্তিপুর - পরিচয় ( ২ য়  ভাগ ) :  কালীকৃষ্ণ  ভট্টাচার্য 

                                                   

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন