মঙ্গলবার, ২৯ আগস্ট, ২০১৭

Bonedi Barir Durga Puja,Kolkata



 কলকাতার  বনেদি  বাড়ির  দুর্গা  পূজা  

শ্যামল  কুমার  ঘোষ 


            কলকাতার  বারোয়ারি  পুজোতে  'কর্পোরেট'  হস্তক্ষেপের  পর  দুর্গাপুজোতে  এল  এক  আমূল  পরিবর্তন।  ক্লাবগুলোর  মধ্যে  শুরু  হল  সুস্থ  প্রতিযোগিতা।  শুরু  হল  থিমের  পুজো।  

            প্রতি  বছর  ক্লাবগুলোর  নতুন  নতুন  থিম  দেখতে  রাস্তায়  মানুষের  ঢল  নামে।  এখন  তো  মহালয়া  থেকেই  শুরু  হয়  ঠাকুর  দেখা।  এই  সব  পুজোতে  পুজোটা  হয়  গৌণ।  কিন্তু  এই বারোয়ারি  পুজোর  বাইরে  আর  এক  রকম  পুজো  হয় কলকাতার  বনেদি  বাড়িগুলোর  থামওয়ালা  ঠাকুরদালানে।  এই  সব  বাড়ির পুজো  কোনটা  একশ  বছরের  পুরানো।  কোনটা  আবার  দু-তিনশ,  এমন  কি  চারশ  বছরেরও  বেশি  পুরানো।  এই  সব  বাড়ির  পুজোর  সঙ্গে  জড়িয়ে  আছে  কিংবদন্তি,  ইতিহাস আর  পরম্পরা।  এখন  হয়তো  আগের  মত  সেই  চোখ-ধাঁধানো জৌলুস  নেই,  ঠিকই।  কিন্তু  এই  সব  বাড়িতে  পুজো  হয় অতীতের  পরম্পরা  মেনে,  নিষ্ঠা  সহকারে।  বাড়ির  বেশির  ভাগ  সভ্য-সভ্যারা  কলকাতার  অন্যত্র,  বাংলার  বাইরে  এমন  কি বিদেশেও  থাকেন।  তাঁরা  পুজো  উপলক্ষ্যে  এক  সঙ্গে  মিলিত হন।  এই  সব  বাড়ির  সাবেকি  পুজোতে  উপস্থিত  হলে  আপনি হয়তো  পৌঁছে  যাবেন  সুদূর  অতীতে।       

উত্তর,  মধ্য  ও  পূর্ব  কলকাতা :   

শোভাবাজার রাজবাড়ি / Shobhabazar Rajbari :  
( শোভাবাজার মেট্রো স্টেশনের কাছে )

সংক্ষিপ্ত  ইতিহাস :  শোভাবাজার  নামের  উৎস  নিয়ে  মতভেদ  আছে। এক  মতে, বর্তমান  শোভাবাজার  অঞ্চলটির  আগের  নাম  ছিল  'পাবনার  বাগান'।  দুর্গাপূজা  বা  অন্যান্য  আনন্দোৎসবে  রাজবাড়ি  অপরূপ  আলোতে  সাজানো  হওয়াতে  'শোভা'  বেড়ে  যেত  ও  প্রচুর  লোক  সমাগমে  'বাজারে'  পরিণত  হত।  তার  থেকে  নাম  হয়  শোভাবাজার।  অন্য  মতে,  এখানে  আগে  শোভারাম  বসাকের  বাগান  বাড়ি  ছিল।  এই  শোভারামের  নাম  থেকে  হয়  শোভাবাজার।   

            শোভাবাজার  রাজবাড়ির  প্রতিষ্ঠাতা  মহারাজা  নবকৃষ্ণ  দেব।  তাঁর  পিতা  রামচরণ  দেব  ছিলেন  কটকের  দেওয়ান।  নবকৃষ্ণ  ছিলেন  রামচরণের  তিন  পুত্রের  মধ্যে  কনিষ্ট।  অল্প  বয়সেই  তিনি  ফার্সি  ভাষায়  পারদর্শী  হয়ে  ওঠেন।  ইংরাজিও  শিখেছিলেন।  তিনি  ছিলেন  ওয়ারেন  হেস্টিংসের  ফার্সি  ভাষার  গুরু।  তাঁর  কাজে  সন্তুষ্ট  হয়ে  ইস্ট  ইন্ডিয়া  কোম্পানি  তাঁকে  মুন্সি  পদে  নিয়োগ  করেন।  এই  কাজে  তাঁর  দক্ষতা  দেখে  কর্নেল  ক্লাইভ  তাঁকে  বহু  গুরুত্বপূর্ণ  কাজ  দেন  যা  স্বাধীন  সরকারের  বিদেশ  সচিবের  কাজের  সমতুল্য।  সিরাজ-উদ-দৌলা  যখন  কলকাতা  আক্রমণের  জন্য  হালসিবাগে  ছাউনি  ফেলেন  তখন  বহু  উপঢৌকন  দিয়ে  নবকৃষ্ণকে  তাঁর  কাছে  পাঠানো  হয়।  মীর  জাফর  ও  কর্নেল  ক্লাইভের  মধ্যে  ষড়যন্ত্রেরও  মাধ্যম  ছিলেন  নবকৃষ্ণ।

             রাজা  নবকৃষ্ণ  ছিলেন  বিদ্যোৎসাহী।  তিনি  বিক্রমাদিত্যের  অনুকরণে  'নবরত্ন'  সভা  স্থাপন  করেছিলেন।  তাঁর  সভার  অলংকার  ছিলেন  জগদ্বিখ্যাত  জগন্নাথ  তর্কপঞ্চানন,  মহাকবি  বাণেশ্বর  বিদ্যালঙ্কার,  নবদ্বীপের  প্রধান  নৈয়ায়িক  শঙ্কর  তর্কবাগীশ,  বলরাম  তর্কভূষণ,  কামদেব  বিদ্যাবাচষ্পতি,  গদাধর,  নৈয়ায়িক  শিশুরাম  তর্কপঞ্চানন,  স্মার্ত  কৃপারাম  তর্কবাগীশ  ও  শান্তিপুরের  রাধামোহন  বিদ্যাবাচষ্পতি  গোস্বামী  ভট্টাচার্য।  এঁরা  সকলেই  সেই  সময়ে  নিজ  নিজ  ক্ষেত্রে  দিকপাল  ছিলেন।  দুর্লভ  সংস্কৃত  ও  ফার্সী  পুঁথি  সংগ্রহে  তিনি  উদারহস্তে  অর্থ  ব্যয়  করতেন।  বেহালা  থেকে  কুলপি  পর্যন্ত  তিনি  একটি  রাস্তা  নির্মাণ  করে  দিয়েছিলেন।  পুরাতন  ও  নতুন  রাজবাড়ির  মধ্যে  তিনি  আর  একটি  রাস্তা  তৈরি  করেছিলেন  যার  বর্তমান  নাম  রাজা  নবকৃষ্ণ  স্ট্রিট।  পুত্র  সন্তান  না  থাকায়  মহারাজা  তাঁর  বড়ভাই  রামসুন্দর  দেবের  পুত্র  গোপীমোহনকে  দত্তক  নেন।  পরে  তাঁর  নিজের  একটি  পুত্র  হয়।  ইনিই  রাজা  রাজকৃষ্ণ।  নবকৃষ্ণের  মৃত্যুর  পর  সুপ্রিম  কোর্টের  মামলার  রায়ে  তাঁর  দুই  পুত্র  গোপীমোহন  ও  রাজকৃষ্ণ  নবকৃষ্ণের  সম্পত্তির  সমান  সমান  অংশীদার  হন।  রাজা  নবকৃষ্ণ  স্ট্রীটের  উত্তর  দিকে  অবস্থিত  পুরাতন  রাজবাড়ি ( ৩৩, রাজা  নবকৃষ্ণ  স্ট্রিট )  পান  গোপীমোহন  ও  দক্ষিণ  দিকে  অবস্থিত  নতুন  রাজবাড়ি ( ৩৬, রাজা  নবকৃষ্ণ  স্ট্রিট )  পান  রাজকৃষ্ণ।  গোপীমোহনের  বংশধরগণ  হলেন  বড়তরফ  আর  রাজকৃষ্ণের  বংশধরগণ  হলেন  ছোটতরফ।  
     
            ১৭৫৭ সালে  পলাশী  যুদ্ধের  পর  নবকৃষ্ণ  পুরানো  রাজবাড়িতে  দুর্গোৎসবের  সূচনা  করেন।  সে  বছর  পুজোয়  বিশেষ  অতিথি  ছিলেন  স্বয়ং  লর্ড  ক্লাইভ।  অনেক  পরে  ১৭৯০-এ   নতুন  রাজবাড়িতেও  দুর্গা  পূজা   শুরু  হয়।  

  ৩৩, রাজা  নবকৃষ্ণ  স্ট্রিটের  বাড়ি  ও  দুর্গা  প্রতিমার  ছবি ( ২০১৫ সালে  তোলা ) : 


রাজবাড়ি  ও  ঠাকুরদালান 

প্রতিমা - ১

প্রতিমা - ২

৩৬, রাজা  নবকৃষ্ণ  স্ট্রিটের 
 ঠাকুর  দালান  ও  প্রতিমার ছবি ( ২০১৫ সালে  তোলা ) : 


ঠাকুর  দালানের  একাংশ ( বাহির )

ঠাকুর  দালানের  একাংশ ( ভিতর )

প্রতিমা 

ছাতু বাবু লাটু বাবুর বাড়ি / Chhatu Babu Latu Babur Bari : 
রামদুলাল নিবাস, ৬৭ ই, বিডন স্ট্রিট।  ( বিডন স্ট্রিট পোস্ট অফিসের কাছে। ) 

সংক্ষিপ্ত  ইতিহাস : ছাতু  বাবু  ও  লাটু  বাবুর  পিতা  রামদুলাল  দে  শৈশবে  পিতৃমাতৃহীন  হন। তাঁকে  লালন  পালন  করেন  তাঁর  মাতামহ  ও  মাতামহী।  তাঁর  মাতামহী  বিখ্যাত  ধনী  ব্যবসায়ী  হাটখোলার  দত্ত  পরিবারের  মদনমোহন  দত্তের  বাড়িতে  রাঁধুনির  কাজ  পান।  রামদুলালকে  সেখানে  থাকতে  দেওয়া  হয়।  মনিবের  বাড়িতে  থেকে  তিনি  বাংলা  ও  কথা  বলবার  মতো  মোটামুটি  ইংরাজি  ভাষা  শেখেন।  সেখানে  প্রথমে  তিনি  মাসিক  পাঁচ  টাকা  বেতনে  বিল-সরকারের  কাজ  পান।  পরে  মাসিক  দশ  টাকা  বেতনে  জাহাজ-সরকারের  চাকুরি  পান।  তিনি  মনিবের  পক্ষে  নিলামে  উপস্থিত  থাকতেন।  একদিন  তিনি  নিলামে  ডুবে  যাওয়া  একটা  জাহাজ  নগদ  ১৪০০০  টাকায়  কেনেন।  নিলাম  থেকে  যখন  বেরিয়ে  আসছেন  তখন  এক  ইংরেজ  ভদ্রলোক  উপযাচক  হয়ে  এসে  জাহাজটি  নগদ  এক  লক্ষের  কিছু  কমে  কিনে  নেন।  রামদুলাল  এই  টাকার  পুরোটাই  মনিবকে  দিয়ে  দেন।  মনিব  মদনবাবু  রামদুলালের  এই  সততা  দেখে  পুরো  টাকা  তাঁকে  দিয়ে  দেন।  এই  টাকাকে  পুঁজি  করে  ভবিষ্যতে  তিনি  উন্নতির  চরম  শিখরে  পৌঁছান।  তিনি  ছিলেন  স্বাধীনোত্তর  মার্কিন  ও  ভারতের  মধ্যে  বাণিজ্যের  পথিকৃৎ।  শোনা  যায়,  মৃত্যুর  সময়  তিনি  এক  কোটি  তেইশ  লক্ষ  টাকা  রেখে  যান।  তাঁর  দান  ও  উদারতা  ছিল  অপরিসীম।  মাদ্রাজের  দুর্ভিক্ষপীড়িতদের  ত্রাণের  জন্য  তিনি  এক  লক্ষ  টাকা  দান  করেন। হিন্দু  কলেজ  স্থাপনের  জন্য  দেন  ৩০০০০  টাকা।  বেলগাছিয়ায়  তিনি  একটি  অতিথিশালা  স্থাপন  করেন।  সেখানে  অভাবী  লোকদের  উদারভাবে  খাদ্য  দেওয়া  হত।  বারাণসীতে  তিনি  দ্বাদশ  শিবমন্দির  প্রতিষ্ঠা  করেন।  তাঁর  দুই  পুত্র,  আশুতোষ  ও  প্রমথনাথ।  এঁরা  যথাক্রমে  সাতু ( ছাতু )  বাবু  ও  লাটু  বাবু  নামে  বেশি  পরিচিত  ছিলেন।  আশুতোষ  বাবু  ছিলেন  তাঁর  সময়ের  শ্রেষ্ঠ  সেতারিদের  মধ্যে  অন্যতম।  দুই  ভাই  যেমন  ছিলেন  দানশীল,  তেমন  ছিলেন  বিলাসী।  তাঁদের  এই  দানশীলতা  ও  বিলাসিতার  জন্য  তাঁরা  'বাবু'  নামে  পরিচিত  ছিলেন। সেকালে  'বাবু'  বলতে  অত্যন্ত  ধনী  ও  খ্যাতিসম্পন্ন  ব্যক্তিকে  বোঝাত।  
            
বাড়ির  ঠাকুর  দালান  ও  প্রতিমার  ছবি ( ২০১৫ সালে  তোলা ) :


ঠাকুর  দালান
প্রতিমা - ১

প্রতিমা - ২

দর্জিপাড়া মিত্র বাড়ি / Darjipara Mitra Bari :  
১৯, নীলমণি মিত্র স্ট্রিট । ( বিডন রো- এর পাশে। ) 

সংক্ষিপ্ত  ইতিহাস :  এই  বাড়ির  দুর্গাচরণ  মিত্রের  অনেক  ব্যবসার  মধ্যে  একটি  ছিল  মুর্শিদাবাদের  নবাব  সিরাজ-উদ-দৌলাকে  রত্ন  সরবরাহ।  এই  ব্যবসা  করেই  এই  পরিবারের  সমৃদ্ধি।  দুর্গাচরণের  ভাইপো  নীলমণি  সেই  ব্যবসা  ধরে  রাখেন।  ( তাঁর  নামেই  রাস্তার  নামকরণ  হয় -  নীলমণি  মিত্র  স্ট্রিট। )  পরে  অবস্থা  কিছুটা  পড়ে  গেলেও  নীলমণির  নাতি  রাধাকৃষ্ণের  সময়ে  আবার  অবস্থার  উন্নতি  হয়।  তিনিই  এই  বাড়িতে  দুর্গা  পুজো  শুরু  করেন।  এই  বাড়িতে  সন্ধি  পুজোতে  ১০৮ টা  পদ্মের  বদলে  ১০৮  টা  অপরাজিতা  উৎসর্গ  করা  হয়।  প্রতিমার  সিংহ  ঘোটক  আকৃতির।  প্রতিমার  পিছনের  চালি  'মঠচৌড়ি'  অর্থাৎ  তিন  চালি।  এই  বাড়ির  দশমীতে  প্রতিমা  বরণের  অনুষ্ঠান  খুবই  দৃষ্টিনন্দন।      

বাড়ির  প্রতিমা বরণের ছবি ( ২০১৫ সালে  তোলা ) :


ঠাকুর  বরণ - ১

ঠাকুর  বরণ - ২

ঠাকুর  বরণ - ৩

হাটখোলা দত্ত বাড়ি / Hatkhola Datta Bari :
   ৭৮, নিমতলা  ঘাট  স্ট্রিট। 


সংক্ষিপ্ত  ইতিহাস :  এই  সভ্রান্ত  পরিবারটি  বালির  প্রাচীন  দত্ত  পরিবারের  একটি  শাখা।  এঁদের  পূর্বপুরুষ  গোবিন্দ  শরণ  দে  দিল্লির  কোন  বাদশাহের  কাছ  থেকে  জায়গীর  লাভ  করে  আন্দুল  থেকে  বসবাসের  জন্য  কলকাতায়  আসেন।  এঁর  চার  পুত্র -  বাণেশ্বর,  ভুবনেশ্বর,  বিশ্বেশ্বর  ও  রামনারায়ণ।  বাণেশ্বরের   তৃতীয়  পুত্র  রামচন্দ্র  ছিলেন  ইস্ট  ইন্ডিয়া  কোম্পানির  আমদানি  রফতানি  বিষয়ের  বেনিয়ান।  রামচন্দ্র  ভায়েদের  সম্মতি  নিয়ে  তাঁদের  জমি-জায়গা-বাড়ির  পরিবর্তে  হাটখোলা  অঞ্চলে  ভূ-সম্পত্তি  কেনেন।  তখন  থেকেই  এঁদের  পরিচয়  হয়  হাটখোলার  দত্ত  পরিবার।  রামচন্দ্রের  ছিল  পাঁচ  পুত্র -  কৃষ্ণচন্দ্র,  মাণিক্যচন্দ্র,  ভারতচন্দ্র,  শ্যামচন্দ্র  ও  গোরাচাঁদ।  মধ্যম  পুত্র  মাণিক্যচন্দ্রের  তিন  পুত্র -  জগৎরাম,  কৌতুকরাম  ও  গুলাবরাম।  জগৎরাম  দত্ত  এই  ৭৮,  নিমতলা  ঘাট  স্ট্রিটে  ভদ্রাসন  স্থাপন  করে  শুরু  করেন  দুর্গোৎসব।  জগৎরামের  ছিল  তিন  পুত্র -  কাশীনাথ,  রামজয়  ও  হরসুন্দর।  এখন  এখানে  বাস  করেন  রামজয়ের  বংশধরেরা।  যশোহর  ও  হুগলি  জেলায়  এঁদের  জমিদারি  ছিল। 

            এই  বাড়ির  প্রতিমার  সিংহ  ঘোটক  আকৃতির।  প্রতিমার  পিছনের  চালি  'মঠচৌড়ি'  অর্থাৎ  তিন  চালি।  পুজোর  সমস্ত  কাজ  করেন  ব্রাহ্মণেরা।  
   
এই  বাড়ির  প্রতিমার  ছবি ( ২০১৫ সালে  তোলা ) :

প্রতিমা - ১

মদন  মোহন  দত্ত  বাড়ি  /  Madan  Mohan  Datta House :
২,  দত্তপাড়া  লেন,  কলকাতা - ২০,  আহিরিটোলা।  ( মোটা  শিবমন্দিরের  কাছে। )

সংক্ষিপ্ত  ইতিহাস :  হাটখোলার  দত্ত  বংশের  রামচন্দ্রের  ছিল  পাঁচ  পুত্র -  কৃষ্ণচন্দ্র,  মানিক্যচন্দ্র,  ভারতচন্দ্র,  শ্যামচন্দ্র  ও  গোরাচাঁদ।  জ্যেষ্ঠ  কৃষ্ণচন্দ্রের  চার  পুত্র -  মদনমোহন, রামশঙ্কর,  রামকান্ত  ও  রামলাল।   দত্ত  পরিবারের  মদনমোহন  দত্তের  নাম  ছিল  অত্যন্ত  জনপ্রিয়।  তিনি  ছিলেন  সভ্রান্ত  জমিদার,  ব্যাঙ্কিং  ব্যবসায়ী  ও  কয়েকটি  জাহাজের  মালিক।  এঁরই  সাহায্যে  রামদুলাল  দে  সাধারণ  অবস্থা  থেকে  বিপুল  সম্পদের  মালিক  হতে  পেরেছিলেন।  মদনমোহন  অত্যন্ত  ধর্মপ্রাণ  ব্যক্তি  ছিলেন।  আমতা,  মেদিনীপুর,  ঢাকা  ও  অন্যান্য  স্থানে  তিনি  পুষ্করিণী  ও  কূপ  খনন  করে  দিয়েছিলেন।  অনেক  গুলি  শিবমন্দির  নির্মাণ  করে  ছিলেন।  গয়ার  প্রেতশিলা  পাহাড়ে  চূড়া  প্রর্যন্ত  ওঠার  জন্য সিঁড়ি  করে  দিয়েছিলেন।  

বাড়ির  ঠাকুর  দালান  ও  প্রতিমার  ছবি ( ২০১৭ সালে  তোলা ) :


ঠাকুর  দালান

প্রতিমা - ১

প্রতিমা - ২


অধরলাল  সেন  বাড়ি  /  Adharlal  Sen  House :
৯৬ এ  এবং  ৯৭ বি,  বেনিয়াটোলা  স্ট্রিট।  ( বি.  কে.  পাল  এভিনিউ  ও  রবীন্দ্র  সরণির  সংযোগস্থলের  কাছে। )  এখানে  এখন  দুটি  বাড়িতে  পুজো  হয়।  ৯৭ বি  বাড়িটির  পুজো  প্রাচীন

            ডেপুটি  ম্যাজিস্ট্রেট  অধরলাল  সেন  ছিলেন  শ্রীশ্রীরামকৃষের  একনিষ্ঠ  ভক্ত।  তাঁর  পিতা  রামগোপাল  সেন  ১৮৫৯  খ্রীষ্টাব্দে  এই  বাড়িতে  দুর্গাপুজো  শুরু  করেন।  বৈষ্ণব  মতে  পুজো  হয়।  ভোগ  রান্না  হয়  গঙ্গা  জলে।  অষ্টমীতে  কুমারী  পুজো  হয়।  

৯৭ বি,  বেনিয়াটোলা  স্ট্রিট  বাড়ির  প্রতিমার  ছবি ( ২০১৭ সালে  তোলা ) :
প্রতিমা

৯৬ এ ,  বেনিয়াটোলা  স্ট্রিট  বাড়ির  প্রতিমার  
ছবি ( ২০১৭ সালে  তোলা ) :
প্রতিমা - ১

প্রতিমা - ২
অমৃত  লাল  দাঁ  বাড়ি  /  Amrit  Lal Dawn House :
 ৮,  দিনু  রক্ষিত  লেন।  (  বি.  কে.  পাল  এভিনিউ  ও  রবীন্দ্র  সরণির  সংযোগস্থলের  কাছে  বেনিয়াটোলা  স্ট্রিট। বেনিয়াটোলা  স্ট্রিটে  ঢুকে  পাওয়া  যাবে  দিনু  রক্ষিত  লেন।  )

বাড়ির  ফটক  ও  প্রতিমার  ছবি ( ২০১৭ সালে  তোলা ) :


বাড়ির  ফটক

প্রতিমা - ১

প্রতিমা - ২

কবিরাজ  গঙ্গাপ্রসাদ  সেন  পরিবার  /  Kabiraj  Gangaprasad  Sen  Family :
১৭, কুমারটুলি  স্ট্রিট।  (  কুমারটুলি  ঘাটের  কাছে। )

সংক্ষিপ্ত  ইতিহাস : ঢাকার ( বর্তমান  বাংলাদেশ )  প্রসিদ্ধ  কবিরাজ  ছিলেন  নীলাম্বর  সেন।  নীলাম্বর  সেনের  পুত্র  গঙ্গাপ্রসাদ  সেন।  পিতার  মত  তিনিও  ছিলেন  নামকরা  কবিরাজ । পূর্ববঙ্গ  থেকে  এদেশে  এসে  কলকাতার  কুমোরটুলি  অঞ্চলে  বসবাস  শুরু  করেন  সেন  পরিবার।  কবিরাজ  হিসাবে  পিতার  খ্যাতিকেও  ছাপিয়ে  যান  গঙ্গাপ্রসাদ।  শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণের  তিনি  চিকিৎসক  ছিলেন।  

            ১৮৪০  খ্রীষ্টাব্দে  গঙ্গাপ্রসাদ  দুর্গাপুজো  আরাম্ভ  করেন।  পুজো  হয়  শাক্ত  মতে।  এখানে  দেবী  দুর্গার  বাঁ  দিকে  থাকেন  গণেশ।  অষ্টমীতে  হয়  জোড়া  কালী  পুজো।  আগে  দুর্গাপুজোয়  পাঁঠা  বলি  হলেও  এখন  শুধু  চালকুমড়া  ও  আখ  বলি  দেওয়া  হয়।  বাড়িতে  লক্ষ্মী,  গোবিন্দ  ও  নারায়ণের  নিত্য  পুজো  হয়।  বাড়িতে রথ  আছে।  রথের  দিন  রথযাত্রার  মধ্যে  দিয়ে  হয়  প্রতিমার  কাঠামো  পুজো।  সেই  দিনই  শুরু  হয়  প্রতিমা  নির্মাণ।                    

বাড়ির  ঠাকুর  দালান  ও  প্রতিমার  ছবি ( ২০১৭ সালে  তোলা ) :
ঠাকুর  দালান

প্রতিমা - ১

প্রতিমা - ২

ভোলানাথ  দত্ত  বাড়ি / Bholanath Dutta Bari : 
ভোলানাথ  ধাম,  ৩৩/২, বিডন  স্ট্রিট। ( অভেদানন্দ রোড। ) 

            উত্তর  কলকাতার  এই  দত্ত  পরিবার  গন্ধবণিক  সম্প্রদায়ভুক্ত।  পরিবারের  দাবি,  এই  পরিবার  চাঁদ  সদাগর  ও  ধনপতি  সদাগরের  বংশ।  চাঁদ  সদাগর  ছিলেন  পরম  শিবের  ভক্ত।  দত্ত  বংশের  বলরাম  দত্ত  বর্ধমান  জেলার  নপাড়া  গ্রাম  থেকে  এসে  কলকাতার  বিভিন্ন  স্থানে  বসবাস  করেন  এবং  ব্যবসা  করে  উন্নতি  লাভ  করেন।  ভোলানাথ  দত্ত  বলরাম  দত্তেরই  উত্তরসূরি।  তিনি  কাগজের  ব্যবসা  করে  প্রচুর  সম্পত্তির  অধিকারী  হন।  তিনি  কাশীধামে  ভোলানাথ  আশ্রমে  প্রথম  শিবদুর্গা  মূর্তিতে  দুর্গা  পুজোর  প্রবর্তন  করেন।  পরে  উত্তর  কলকাতার  ভোলানাথ  ভবনে  পুজো  শুরু  হয়।  এই  বাড়িতে  পুজোর  সময়  বাড়ির  উঠোনে  সুন্দর  আলপনা  দেওয়া  হয়।  দীপাবলিতে  এই  বাড়ি  থেকে  সুন্দর  সুন্দর  ফানুস  তৈরি  করে  ছাড়া  হয়।  

 বাড়ি,  প্রতিমা  ও  উঠোনে  দেওয়া  আলপনার  ছবি  ( ২০১৫ সালে  তোলা ) : 
বাড়ি 

বাড়ির  উপরে  শিল্পকর্ম 

প্রতিমা - ১

প্রতিমা - ২

উঠোনে  দেওয়া  আলপনা

চোরবাগান  মিত্র  বাড়ি  /  Chorbagan  Mitra  Bari :  
৮৪,  মুক্তারাম  বাবু  স্ট্রিট।   
( রামমন্দির  থেকে  এসপ্লানেডের  দিকে  সামান্য  এগুলে  মুক্তারাম  বাবু  স্ট্রিট  পড়বে।  বাঁ  দিকের  রাস্তা  ধরে  সামান্য  এগুলে  রাস্তার  ডান  দিকে   মিত্র  বাড়ি  পাওয়া  যাবে। )

সংক্ষিপ্ত  ইতিহাস :  এই  পরিবারের  আদি  বাড়ি  ছিল  হুগলির  কোন্নগরে।  রামনাম  মিত্র  ছিলেন  মুর্শিদাবাদের  নবাবের  দেওয়ান।  দেওয়ানি  থেকে  প্রচুর  অর্থ  উপার্জনের  পর  তিনি  গোবিন্দপুরে  এসে  বসবাস  ও  ব্যবসা  শুরু  করেন।  তাঁর  পুত্র  অযোধ্যারাম।  ইস্টইন্ডিয়া  কোম্পানি  গোবিন্দপুরে  কেল্লার  জন্য  জমি  নিলে  অযোধ্যারাম  চলে  আসেন  মেছুয়াবাজারে।  তাঁর  দুই  ছেলে  কৃপারাম  ও  জগন্নাথ।  বিষয়সম্পত্তি  ভাগ-বাঁটোয়ারার  পর  কৃপারাম  চলে  যান  শুঁড়া  গ্রামে  ( এখনকার  বেলেঘাটা  অঞ্চল )।  জগন্নাথ  পৈতৃক  বাড়িতেই  থেকে  যান। 

            ৩৫০  বছরের  বেশি  পুরানো  এই  পরিবারের  চোরবাগানের  বাড়িটি  তৈরি  করেছিলেন  জগন্নাথের  পুত্র  রামসুন্দর মিত্র,  লোকমুখে  যিনি  খ্যাঁদারাম  মিত্র  নামে  পরিচিত  ছিলেন।  ভূমিকম্পে  এ  বাড়ির  বাইরের  অংশ  ভেঙে  যাওয়ায়  ম্যাকিনটশ  বার্নকে  দিয়ে  বাড়িটির  ভোল  পাল্টে  ফেলা  হয়। 

            রামসুন্দরের  ছিল  মহাজনী  কারবার।  লর্ড  ক্লাইভকে  তিনি  সুদে  টাকা  ধার  দিতেন।  রামসুন্দরের  পরেও  এ  বাড়ির  অনেকেই  মহাজনী  কারবার  করেছেন।  সাহেবরাই  শুধু  নন,  কলকাতার  বিখ্যাত  পরিবার  গুলির  অনেকেই  তাঁদের  কাছ  থেকে  টাকা  ধার  করতেন।


ঠাকুর  দালান  ও  প্রতিমার  ছবি ( ২০১৭ সালে  তোলা ) :
ঠাকুর  দালান

প্রতিমা - ১

প্রতিমা - ২

চোরবাগান  চ্যাটার্জী  বাড়ি  /  Chorbagan  Chatterjee  House :

  ১২০,  মুক্তারাম  বাবু  স্ট্রিট। 
(  মিত্র  বাড়ি  থেকে  আরও  এগুলে  পাওয়া  যাবে  চ্যাটার্জী  বাড়ি। )

বাড়ির  ঠাকুর  দালান  ও  প্রতিমার  ছবি ( ২০১৭ সালে  তোলা ) :
প্রতিমা - ১

প্রতিমা - ২

চোরবাগান  শীল  বাড়ি  /  Chorbagan  Seal's   House :
 
৪২,  মুক্তারাম  বাবু  স্ট্রিট। 
( চোরবাগান  চ্যাটার্জী  বাড়ির  বাড়ির  ঠাকুর  দেখে  আবার   মুক্তারাম  বাবু  স্ট্রিট  ধরে  চিত্তরঞ্জন  এভেন্যুয়ে  ফিরে  আসুন।  চিত্তরঞ্জন  এভেন্যুউ  অতিক্রম  করে  অপর  পাড়ে  মুক্তারাম  বাবু  স্ট্রিট  ধরে  এগুলে  শীল  বাড়ি  পাওয়া  যাবে। )

বাড়ির  ঠাকুর  দালান  ও  প্রতিমার  ছবি ( ২০১৭ সালে  তোলা ) :
ঠাকুর  দালান

প্রতিমা - ১

প্রতিমা - ২
কুণ্ডু  বাড়ি / Kundu House :  
৯, প্যারী  মোহন  পাল  লেন,  কলকাতা - ৭  
চোরবাগান  শীল  বাড়ির  ঠাকুর  দেখে  আবার  মুক্তারাম  বাবু   স্ট্রিট  ধরে  চিত্তরঞ্জন  এভেন্যুয়ে  ফিরে  আসুন।  সেখান  থেকে  গিরিশ  পার্কের  দিকে  এগুলে  বাঁ  দিকে  বারাণসী  রোড  পড়বে।  বারাণসী  রোড  ধরে  গেলে  প্যারী  মোহন  পাল  লেন  পাওয়া  যাবে )

এই  বাড়ির  প্রতিমার  ছবি ( ২০১৭ সালে  তোলা ) :
প্রতিমা - ১

প্রতিমা - ২

শ্যামল  ধন  দত্ত  
বাড়ি ( ঘোষ  বাড়ি  বলেও  পরিচিত ) / Shyamal  Dhan  Dutta  House ( Also  known  as  Ghosh  House )  : 
১৫৯,  বলরাম  দে  স্ট্রিট। 
( গিরিশ  পার্ক  থেকে  চিত্তরঞ্জন  এভেন্যুউ  ধরে  শ্যামবাজারের  দিকে  এগুলে  বাঁ  দিকে  পড়বে  বলরাম  দে  স্ট্রিট  । )

সংক্ষিপ্ত  ইতিহাস :  হাটখোলা  দত্ত  পরিবারের  একটি  শাখা  এই  দত্ত  পরিবার।  হাটখোলার  দত্ত  পরিবারের  দেওয়ান  জগৎরাম  দত্তের  ছিল  তিন  পুত্র :  কাশীনাথ,  রামজয়  ও  হরসুন্দর।   রামজয়ের  ছয়  পুত্রের  মধ্যে  জ্যেষ্ঠ  কালীচরণ।  শ্যামলধন  ছিলেন  কালীচরণের  পাঁচ  পুত্রের  মধ্যে  কনিষ্ঠ।  হাটখোলার  দত্ত  বাড়ি  থেকে  এসে  নিলামে  এই  বাড়ি  কেনেন  শ্যামলধন  দত্ত।  তিনি  এই  বংশের  আদি  পুরুষ।  কলকাতা  হাইকোর্টের  সলিসিটর  শ্যামলধন  তাঁর  নতুন  বাসভবনে  ১৮৮০  সাল  থেকে  থাকতে  শুরু  করেন।  এর  দু  বছর  পর  থেকে  শুরু  হয়  দুর্গাপুজো।  এখানে  প্রতিমার  পিছনের  চালি  'মঠচৌড়ি'  অর্থাৎ  তিন  চালি।  দেবীর  বাহন  ঘোটকাকৃতি  সিংহ।  সপ্তমী  থেকে  দশমী  তিন  দিন  কুমারী  পুজো  হয়।  পুজোর  ভোগে  থাকে  লুচি,  রাধাবল্লভী,  লেডিকেনি,  খাস্তা  কচুরি, দরবেশ, গজা  আর  নারকেল  নাড়ু।  শ্যামলধনের  ছিল  দুই  কন্যা।  ছোট  কন্যা  রাজলক্ষ্মী  দেবীর  বিয়ে  হয়  মানিকতলার  গিরিশ  ঘোষের  পরিবারে।  তাই  এই  বাড়ি  এখন  ঘোষ  পরিবারের  অধীন।  বলা  বাহুল্য,  পুজো  পরিচালনাও  তাঁরাই  করেন।    

বাড়ির  প্রতিমার  ছবি ( ২০১৭ সালে  তোলা ) :
প্রতিমা - ১

প্রতিমা - ২

প্রতিমা - ৩

নরসিংহ  দাঁ  বাড়ি :
২২ এ,  বিবেকানন্দ   রোড,  কলকাতা - ৬ 
( বলরাম  দে  স্ট্রিট  ও  কালী  কৃষ্ণ  ঠাকুর  স্ট্রিটের  সংযোগস্থলের  কাছে। )


সংক্ষিপ্ত  ইতিহাস :  দয়ারাম  দাঁর  বংশধর  নরসিংহ  দাঁ  ১৮৩৫   খ্রীষ্টাব্দে  বন্দুকের  ব্যবসা  শুরু  করেন।  এই  ব্যবসা  করে  তিনি  প্রভূত  অর্থ  উপার্জন  করেন।  ১৮৫৯  থেকে  দুর্গাপুজো  শুরু  হয়।  ঢালাই  লোহার  অলংকার  যুক্ত  তিনটি  খিলান  বিশিষ্ট  ঠাকুর  দালানে  হয়  দুর্গাপুজো।  রথের  দিন  প্রতিমার  কাঠামো  পুজো  হয়। পুজোর  ভোগে  থাকে  লুচি-মিহিদানা-পান্তুয়া-গজা।  বাড়িতে  ভিয়েন  বসে।  অতীতের  রীতি  মেনে  আজও  পুজোয়  কামান  দাগা  হয়।  নবমীতে  হয়  কুমারী  পুজো।  দশমীতে  ঠাকুর  বিসর্জনের  আগে  বাড়িতেই  প্রতিমাকে  সাতপাক  ঘোরানো  হয়।  রীতি  মেনে  তখন  বন্দুক  থেকে  ফাঁকা  আওয়াজ  করা  হয়।    

বাড়ির  ঠাকুর  দালান  ও  প্রতিমার  ছবি ( ২০১৭ সালে  তোলা ) :
ঠাকুর  দালান - ১

ঠাকুর  দালান - ২

প্রতিমা - ১

প্রতিমা - ২

শিবকৃষ্ণ  দাঁ  বাড়ি / Shibkrishna Dawn House :
১২ এ,  শিবকৃষ্ণ  দাঁ  লেন     নরসিংহ  দাঁ  বাড়ির  কাছে ) 

সংক্ষিপ্ত  ইতিহাস :    এই  বংশের  আদি  পুরুষ  গোকুল  চন্দ্র  দাঁ  বর্ধমান  জেলার  মেমারির  কাছে  সাতগাছিয়া  থেকে  কলকাতায়  এসেছিলেন।  ব্যবসা  করে  প্রচুর  অর্থ  উপার্জন  করে   তিনি  জোড়াসাঁকো  অঞ্চলে  ভদ্রাসন  তৈরী  করে  বসবাস   শুরু  করেন।  গোকুলচন্দ্রের  পুত্র  শিবকৃষ্ণ  সেই  ব্যবসাকে  আরও  শ্রীবৃদ্ধি  ঘটান।  শিবকৃষ্ণ  দাঁর  নামে  বাড়ির  সামনের  রাস্তা।  ঠাকুরদালানসহ  এই  বাড়ির  ভিতরের  স্থাপত্য  শৈলী  অভিনব  যা  অন্য  বনেদি  বাড়িগুলোর  থেকে  সম্পর্ণ  আলাদা।  বাড়ির  ভিতর  প্রবেশ  করলে  মনে  হয়  যেন  কোন  বনেদি  ইউরোপীয়  প্রেক্ষাগৃহে  প্রবেশ  করেছি। 

            এই  পরিবারের  দুর্গোৎসবের  প্রবর্তন  ১৮৪০  খ্রীষ্টাব্দে।  মা  দুর্গা  মর্তে  দাঁ  পরিবারে  এসে  গহনা  পরেন,  এই  কিংবদন্তির  কথা  এখনও  অনেকে  স্মরণ  করেন।  এখানে  প্রতিমাকে  নানা  গহনায়  সাজানো  হয়।  দেবীর  গায়ে  থাকে  টায়রা,  টিকলি, সোনার  টিপ,  সীতাহার  সহ  অন্যান্য  হার,  চিক, বড়  ঝুমকো,  কানবালা,  চুড়ি, বালা,  কাঁকন,  রতন  চুড়   ও  বাজুবন্ধ  ইত্যাদি।  জোড়াসাঁকোর  প্রিন্স  দ্বারকা  নাথ  ঠাকুর  এই  দাঁ  পরিবারের  দুর্গাপুজোর  আড়ম্বরের  সঙ্গে  পাল্লা  দিতেন।  সুসজ্জিত  রুপোর  ছাতা  মাথায়  দিয়ে  নবপত্রিকা  জগন্নাথ  ঘাটে  স্নানে  যান।  প্রতিমার  চালচিত্র  একচালা।  প্রতিমার  হাতে  থাকে  রুপোর  অস্ত্র।  বৈষ্ণব  মতে  পুজো।  তাই  কোন  বলিদান  হয়  না।  ভোগে  থাকে  লুচি,  নানা  রকমের  ভাজা  ও  মিষ্টি।  দশমীর  দিন  মাকে  বরণের  আগে  প্রথা  মেনে  বাড়ির  বৌরা  সোনার  বিভিন্ন  গহনা  পড়েন।              
বাড়ির  ঠাকুর  দালান  ও  প্রতিমার  ছবি ( ২০১৭ সালে  তোলা )
ঠাকুর  দালান - ১

ঠাকুর  দালান - ২

প্রতিমা - ১

প্রতিমা - ২

প্রতিমা - ৩

খেলাৎ  ঘোষের  বাড়ি  /  Khelat  Ghosh  House

৪৭,  পাথুরিয়া  ঘাটা  স্ট্রিট।  ( রবীন্দ্র  সরণির  উপর  অবস্থিত  লোহিয়া  মাতৃ  সদনের  কাছে। )

             সংক্ষিপ্ত  ইতিহাস  রামলোচন  ঘোষ  কে  আমরা  এই  পরিবারের  উৎস  ধরছি।  কায়স্থ  বংশীয়  রামলোচন  ছিলেন  লেডি  হেস্টিংসের  অন্যতম  সরকার। ওয়ারেন  হেস্টিংসেরও  তিনি  প্রিয়পাত্র  ছিলেন।  তাঁকে   হেস্টিংসের  দেওয়ান  বলা  হত।  তিনি  প্রচুর  ধনসম্পদ  অর্জন  করেন।  ৪৬,  পাথুরিয়াঘাটা  স্ট্রিটে  ছিল  তাঁর  বাড়ি।  তাঁর  তিন  পুত্র :  শিবনারায়ণ,  দেবনারায়ণ  ও  আনন্দনারায়ণ।  খেলাৎচন্দ্র  ছিলেন  দেবনারায়ণের  পুত্র।  তিনি  কলকাতার  গণ্যমান্য  নাগরিকদের  মধ্যে  অন্যতম  ছিলেন।  তিনি  ছিলেন  অনারারি  ম্যাজিস্ট্রেট  ও  জাস্টিস  অব  দি  পিস্।  গোঁড়া  হিন্দু   খেলাৎচন্দ্র  ছিলেন  সনাতন  ধৰ্ম-রক্ষণী  সভার  সভ্য।সাহেবদের  সঙ্গে  ব্যবসাপত্রের  সুবাদেই  তাঁর  সৌভাগ্যের  সূচনা।  তিনি  ছিলেন  নিঃসন্তান।  তাঁর  দত্তকপুত্র  রমানাথ  ছিলেন  বঙ্গদেশীয়  কায়স্থসভার  প্রতিষ্ঠাতা।  রমানাথের  সাহেবপ্রীতির  তুলনা  ছিল  না।  ১৯০২  সালে  মহারানি  ভিক্টোরিয়া  মারা  গেলে  কলকাতায়  হাজার  হাজার  মানুষের  শোকমিছিল  হয়েছিল।  মিছিলে  যাঁরা  যোগ  দিয়েছিলেন  তাঁদের  পেট  ভরে  খাওয়ানো  হয়েছিল।  সমস্ত  ব্যাপারটি  তদারকি  করেছিলেন  বাবু  রমানাথ  ঘোষ  ও  তাঁর  বন্ধুবান্ধবরা।  লর্ড  কার্জনের  পরিকল্পনা  অনুযায়ী  যে  ভিক্টোরিয়া  স্মৃতি  তহবিল  গঠন  করা  হয়  তাতে  তিনি  ২৭  হাজার  টাকা  দান  করেছিলেন।  রমানাথের  দানধ্যানের  আরও  একটি  দিক  আছে।  ১৮৯৮-এর  মন্বন্তরে  দুর্ভিক্ষপীড়িত  মানুষের  সাহায্যের  জন্য  যে  তহবিল  গঠন  করা  হয়  তাতে  তিনি  পাঁচ  হাজার  টাকা  দিয়েছিলেন।  অভাবী  মানুষদের  তিনি  মুক্তহস্তে  দান   করতেন।  সংস্কৃত  শিক্ষার  জন্য  তিনি  কয়েকটি  অবৈতনিক  টোল  চালাতেন। 

            রমানাথের  তিন  ছেলে -  গণেশ,  সিদ্ধেশ্বর  ও  অক্ষয়।  সিদ্ধেশ্বরের  আমলে  মহাত্মা  গান্ধী  এই  বাড়ির  নাচঘরে  সভা  করে  গেছেন। 

            কলকাতায়  এঁদের  শ  খানেক  বাড়ি  আছে।  খেলাৎচন্দ্র  ঘোষের  নামে  পাথুরিয়াঘাটায়  রাস্তা  আছে।  রমানাথ  ঘোষের  নামে  আছে  খড়দহে  রাস্তা।  একটি  কারণে  খেলাৎচন্দ্র  ঘোষ  পরিবারকে  বাঙালি  মনে  রাখবে।  সাহিত্যিক  বিভূতিভূষণ  বন্দোপাধ্যায়  খেলাত  ঘোষ  ইনস্টিটিউশনে  শিক্ষকতা  করতেন।  পরে  তিনি  হন  এই  বাড়ির  গার্জেন-টিউটর।  সিদ্ধেশ্বর  ঘোষের  আমলে  বিভূতিভূষণকে  নায়েব  করে  ভাগলপুরের  জমিদারির  ভার  দিয়ে  পাঠানো  হয়।  সেখানে  ইসমাইলপুর  কাছারিতে  বসে  তিনি  তাঁর  কয়েকটি  বিখ্যাত  গল্প  ও  উপন্যাস  রচনা  করেন।


            সাবেক  ভদ্রাসনের  ঠিক  পাশেই  পাঁচ  খিলান  বিশিষ্ট  দুর্গাদালান  সহ  প্রাসাদসদৃশ  এই  বাড়ি  তৈরী  করে  সেখানেই  খেলাৎচন্দ্র  সাড়ম্বরে  শুরু  করেন  দুর্গোৎসব।  শহরের  অভিজাত  বনেদি  বাড়ির  পুজোগুলোর  মধ্যে  অন্যতম  এই  পুজো।  রুপালি  রাংতা  মোড়া  সিংহাসনে  দেবী  বিরাজ  করেন।  প্রতিমার  পিছনের  চালি  'মঠচৌড়ি'  অর্থাৎ  তিন  চালি।  এখানে  দেবীর  বাহন  ঘোটকাকৃতি  সিংহ।  পুজোতে  লুচি-মিষ্টি-মণ্ডা  ভোগের  সঙ্গে  থাকে  চিনির  মঠ।         

বাড়ির  ঠাকুর  দালান  ও  প্রতিমার  ছবি ( ২০১৭ সালে  তোলা ) :
বাড়ি  ও  ঠাকুর  দালান - ১

ঠাকুর  দালান - ২

প্রতিমা - ১

প্রতিমা - ২

প্রতিমা - ৩

বৈষ্ণব  দাস  মল্লিক  বাড়ি  / Baishnab  Das  Mallick  House
৩২,  দর্পনারায়ণ  ঠাকুর  স্ট্রিট,  কলকাতা - ৬  ( গিরিশ  পার্ক  থেকে  কালী  কৃষ্ণ  ঠাকুর  স্ট্রিট  বরাবর  এগিয়ে  গেলে  মালাপাড়ার  কাছে। )


বাড়ির  ঠাকুর  দালান  ও  প্রতিমার  ছবি ( ২০১৭ সালে  তোলা ) :
ঠাকুর  দালান

প্রতিমা

মতিলাল  শীল  পরিবার  /  Matilal  Seal Family :
৬০ সি ,  কলুটোলা  স্ট্রিট।  ( মৌলানা  সৌকত  আলি  স্ট্রিট। )  চিত্তরঞ্জন  পোস্ট  অফিসের  পাশে।  All  India  Institute  of  Hygiene  &  Public  Health- এর  বিপরীতে।


 সংক্ষিপ্ত  ইতিহাস :  চৈতন্যচরণ  শীলের  পুত্র  বাবু  মতিলাল  শীল  ছিলেন  বাংলার  সুপরিচিত  ধনী  জমিদার।  জাতিতে  এঁরা  সুবর্ণবণিক।  ১৭৯২  খ্রীষ্টাব্দে  কলকাতায়  তাঁর  জন্ম।  শৈশবে,  মাত্র  পাঁচ  বছর  বয়সে  তিনি  পিতৃহীন  হন।  ১৮১৫ খ্রীষ্টাব্দে  তিনি  ফোর্ট  উইলিয়ামের  মিলিটারি  অফিসারদের  মালপত্র  সরবরাহের  কারবার  শুরু  করেন। কিছু  দিন  তিনি  আবগারি  দারোগারও  কাজ  করেন।  ১৮২০ তে  তিনি  স্মিথসন  এবং  আরও  সাত-আটটি  ইউরোপীয়  বাণিজ্য  প্রতিষ্ঠানের  বেনিয়ানের  কাজ  শুরু  করেন।  মেসার্স  মুর  হিকি  অ্যাণ্ড  কোং  নামে  তিনি  নীল  ব্যবসায়ের  একটি  প্রতিষ্ঠান  খোলেন  এবং  ফাটকা  ব্যবসায়ে  আত্মনিয়োগ  করেন।  এসবের  মাধ্যমে  তিনি  প্রচুর  অর্থ  উপার্জন  করেন।  তিনি  কয়েকটি  জমিদারি  কেনেন।  কলকাতা  ও  আশেপাশে  কয়েকটি  বাড়ি  নির্মাণ  করেন।  সীমাহীন  দান  ও  ধর্মকর্মের  জন্য  তিনি  সুপরিচিত  ছিলেন।  ১৮৪১-এ  তিনি  বেলঘরিয়ায়  একটি  ভিক্ষুক  নিবাস  স্থাপন  করেন।  মেডিকেল  কলেজ  স্থাপনের  জন্য  তিনি  জমি  দান  করেছিলেন।  বিদ্যোৎসাহী  মতিলাল  নিজ  নামে  একটি  কলেজ  প্রতিষ্ঠা  করেন  এবং  তার  পরিচালনার  জন্য  মিশনারিদের  হাতে  পর্যাপ্ত  অর্থ  দেন।  তাঁর  বড়  ছেলের  বিয়ের  সময়  দেওয়ানি  অপরাধে  অপরাধী  কয়েদিদের  তিনি  কারামুক্ত  করান।

            এখানে  দুর্গা  কে  ঘরের  মেয়ে  বলে  মনে  করা  হয়।  তাই  রাতে  শোয়ার  ব্যবস্থা  দালানের  পাশে  রাখা  হয়।  মহাসপ্তমীর  সকালে  নিজেদের ( মতি  শীল )  ঘাটে  নবপত্রিকাকে  স্নান  করানো  হয়।  এ  বাড়ির  পুজোর  একটি  রীতি  'আঙট  সজ্জা'।  আঙট  কলাপাতার  উপর  একমণ  চাল  ও  আখ  দিয়ে  সাজানো  হয়।  মাটির  সরায়  থাকে  নানারকম  খাবার।  তার  সঙ্গে  থাকে  কলসি,  থালা  ও  লাল  চেলি।  আর  একটি  রীতি  হল  'আরুগ্যি'।  চাল  ও  দূর্বা  তুলোর  মধ্যে  ভরে  ছোট  ছোট  ৩০  টি  পুরিয়া  তৈরি  করে  সপ্তমীর  দিন  পুজোয়  দেওয়া  হয়। প্রতিটি  পুরিয়াতে  ১০৮ টি  করে  চাল  ও  দূর্বা  থাকে।  দশমীর  দিন  মায়ের  আশীর্বাদ  স্বরূপ  এই  পুরিয়া  সবাই  নিজেদের  কাছে  রেখে  দেন।  অষ্টমীর  দিন  বাড়ির  সদবা  মহিলাদের  মাথায়  ও  দু  হাতে  মালসা  রেখে  ধুনো  পোড়ানো  হয়।  বৈষ্ণব  মতে  পুজো  হয়।  তাই  বলি  হয়  না।  অন্যান্য  বাড়ির  মত  এ  বাড়ির  মহিলারাও  পুজোতে  সাজেন।  তবে  সেই  সাজের  বিশেষত্ব  হল  তাঁদের  নাকের  নথ।  নথে  দুটি  মুক্তোর  মাঝে  একটি  লাল  চুনি  বা  সবুজ  পান্না  এবং  মুক্তোর  নোলক  থাকে।  বিদায়  বেলায়  মাকে  পান-সুপারি  দিয়ে  আগামী  বছরে  আসার  জন্য  নিমন্ত্রন  করা  হয়।  সঙ্গে  হাত  খরচের  জন্য  পাঁচ-গণ্ডা  পয়সা  দেওয়া  হয়।  মতি  শীলের  এক  মেয়ের  বিয়ে  হয়  মল্লিক  পরিবারে। এই  মল্লিকরাই  এখন  এই  বাড়ির  পুজো  পরিচালনা  করেন।                   

বাড়ির  ঠাকুর  দালান  ও  প্রতিমার  ছবি ( ২০১৭ সালে  তোলা ) :
ঠাকুর  দালান

প্রতিমা - ১

প্রতিমা - ২

ধুনো  পোড়ানোর  প্রতীকী  অনুষ্ঠান 



বদন  চন্দ্র  রায়  পরিবার  /  Badan Ch.  Ray  Family :
২ এ ,  গোপাল  চন্দ্র  লেন।  School  of  Tropical  Medicine - এর   বিপরীতে।  কলুটোলা  স্ট্রিট  ( মৌলানা  সৌকত  আলি  স্ট্রিট )  দিয়ে  ঢোকা  যায়। 

বাড়ির  ঠাকুর  দালান  ও  প্রতিমার  ছবি ( ২০১৭ সালে  তোলা ) :
ঠাকুর  দালান
প্রতিমা - ১

প্রতিমা - ২

বাগবাজার  হালদা
  বাড়ি: 
১৭ / ১  কালী  প্রসাদ  চক্রবর্ত্রী  স্ট্রিট,  কলকাতা - ৩
( বাগবাজার  সার্বজনীন  পুজোর  কাছে )


            এই  বাড়ির  দুর্গা  বিগ্রহ  কষ্টিপাথরে  নির্মিত।  প্রায়  সাড়ে  চারশ  বছর  ধরে  এই  বাড়িতে  দেবীর  নিত্য  পূজা  হয়ে  আসছে।  দুর্গা  পূজার  সময়  বিগ্রহের  বিশেষ  পূজা  অনুষ্ঠিত  হয়।  কুমারী  পুজো  এই  বাড়ির  পুজোর  অন্যতম  আকর্ষণ।

            এখানে  উল্লেখ্য,  কুমারী  পুজা  দুর্গা  পুজার  একটি  অঙ্গ।  কালীপূজা,  জগদ্ধাত্রীপূজা,  অন্নপূর্ণাপূজা  ও  কামাখ্যাদি  শক্তিক্ষেত্রেও  কুমারী  পূজার  প্রচলন  রয়েছে।  এক  বছর  থেকে  ষোল  বছর  বয়সী  যে  কোন  অরজা  মেয়ে  কুমারী  হিসাবে  পূজার  যোগ্য।  তবে  সাধারণত  দু  বছর  থেকে  দশ  বছর  বয়সী  এবং  ব্রাহ্মণ  কুমারী  মেয়েই  কুমারী  হিসাবে  পুজো  করা  হয়।  বয়স  ভেদে  পূজিত  কুমারীদের  বিভিন্ন  নামে  অভিহিত  করা  হয়।  যথা :

      ১  বছরের  কুমারীর  নাম  :  সন্ধ্যা           
      ২  বছরের  কুমারীর  নাম  :  সরস্বতী           
      ৩  বছরের  কুমারীর  নাম  :  ত্রিধামূর্তি 
      ৪  বছরের  কুমারীর  নাম  :  কালিকা 
      ৫  বছরের  কুমারীর  নাম  :  সুভাগা        
      ৬  বছরের  কুমারীর  নাম  :  উমা 
      ৭   বছরের  কুমারীর  নাম  :  মালিনী 
      ৮  বছরের  কুমারীর  নাম  :  কুষ্ঠিকা 
      ৯  বছরের  কুমারীর  নাম  :  কালসন্দর্ভা  
     ১০  বছরের  কুমারীর  নাম  :  অপরাজিতা 
     ১১  বছরের  কুমারীর  নাম  :   রুদ্রাণী        
     ১২  বছরের  কুমারীর  নাম  :   ভৈরবী 
     ১৩  বছরের  কুমারীর  নাম  :  মহালপ্তী 
     ১৪   বছরের  কুমারীর  নাম  :  পীঠনায়িকা
     ১৫  বছরের  কুমারীর  নাম  :  ক্ষেত্রজ্ঞা
     ১৬  বছরের  কুমারীর  নাম  :  অন্নদা  বা  অম্বিকা 

                                                             ( বাংলা  উইকিপিডিয়া  থেকে )
          
  ( প্রতিমা  ও  অন্যান্য  ছবিগুলো  ২০১৮ সালের  নবমীর  দিন   তোলা। )

ঠাকুর  দালান

দুর্গা  বিগ্রহ - ১

দুর্গা  বিগ্রহ - ২

কুমারী  পুজো -১

কুমারী  পুজো -২
রানি  রাসমণির   বাড়ি / Rani Rashmoni Bari :  
এস. এন. ব্যানার্জী  রোডে  অবস্থিত। 
( Corporation  Building - এর  কাছে। ) 

         
সংক্ষিপ্ত  ইতিহাস :  ১৭৯৩  খ্রীষ্টাব্দে  রানি  রাসমণি  উত্তর  ২৪  পরগণার  জেলার  অন্তর্গত  হালিশহরের  নিকট  কোনা  গ্রামে  এক  গরীব  কৃষিজীবী-কৈবর্ত  পরিবারে  জন্ম  গ্রহণ  করেন।  তাঁর  বাবার   নাম   হরেকৃষ্ণ  দাস।  মা  রামপ্রিয়া।  মাত্র  আট  বছর  বয়সে   তাঁর  মা  মারা  যান।  কলকাতা  নিবাসী  জমিদার-ব্যবসায়ী  প্রীতরাম  মাড়  ( দাস )  ব্যবসার  কাজে  হালিশহরে  যান।  তিনি  একটি  সুন্দরী  পাত্রী  খুঁজছিলেন।  রাসমণির  রূপ  ছিল  দেখবার  মতো,  তাছাড়া  স্বজাতি।  এগার  বছর  বয়সে  প্রীতরামের  কনিষ্ঠ  পুত্র  রাজচন্দ্রের  সঙ্গে  এক  রাতে  তাঁর  শুভবিবাহ  সম্পন্ন  হল। ( প্রীতরাম  নুন,  পাট,  বাঁশ  ইত্যাদি  অনেক  রকমের  ব্যবসা  করলেও  প্রথম  জীবনে  তিনি  বাঁশের  ব্যবসা  করতেন।  গ্রাম  থেকে  বাঁশের  গাদা  জলে  ভাসিয়ে  কলকাতায়  আনতেন।  এই  ভাসমান  বাঁশরাশিকে  গ্রাম্য  ভাষায়  'মাড়'  বলে।  এর  থেকেই  তিনি  'মাড়'  উপাধি  পান। )  রানি  রাসমণি  ছিলেন  রামচন্দ্রের  তৃতীয়  পক্ষের  স্ত্রী।  রাজচন্দ্রের  দুই  স্ত্রী  মারা  গেলে  তিনি  রাসমণিকে  বিয়ে  করেন।  প্রীতরামের  দুই  পুত্র -  হরচন্দ্র  ও  রাজচন্দ্র।  প্রীতরাম  বেঁচে  থাকতেই  হরচন্দ্রের  মৃত্যু  হয়।  তাই  প্রীতরামের  মৃত্যুর  পর  রাজচন্দ্র  সমস্ত  সম্পত্তির  অধিকারী  হন।  রাসমণির  প্রথম  অবদান  কলকাতার  গঙ্গাতীরের  বাবুঘাট।  তাঁর  অনুরোধে  রাজচন্দ্র  এই  ঘাটটি  বাঁধিয়ে  দিয়ে  জানবাজার  থেকে  ঘাট  পর্যন্ত  রাস্তা  তৈরী  করে  দেন।  রাস্তার  নাম  হয়  বাবু  রোড।  রাজচন্দ্র  ছিলেন  উদারপন্থী,  বিদ্যোৎসাহী।  সতীদাহ  প্রথা  রোধে  রামমোহনের  আন্দোলনের  তিনি  সঙ্গী  ছিলেন।  হিন্দু  কলেজ  প্রতিষ্ঠার  সময়ও  তিনি  সাহায্য  করেন।  রাজচন্দ্রের  মৃত্যুর  পর  তাঁর  সমাজসেবামূলক  কাজকে  আরও  এগিয়ে  নিয়ে  যান  রাসমণি।           

            রাসমণি  ছিলেন  খুবই  তেজস্বিনী  মহিলা।  রাসমণির  বাড়ি  থেকে  গঙ্গাতীর  পর্যন্ত  রাস্তা  দুর্গাপুজোর  সময়  ঢাকের  বাদ্যে  ও  আনন্দ  কোলাহলে  মুখরিত  হোত।  ইংরেজের  পুলিশ  এই  আনন্দোৎসব  বন্ধ  করতে  উদ্যত  হলে  রাসমণি  সেই  রাস্তা  দিয়ে  ইংরেজদের  চলাচল  বন্ধ  করে  দিলেন।  কারণ  সেই  রাস্তাটি  তিনিই  তৈরী  করে  ছিলেন।  তখন  বাধ্য  হয়ে  পুলিশ  তাদের  নিষেধাজ্ঞা  তুলে  নেয়।  পূর্বে  গঙ্গায়  মাছ  ধরতে  কোন  কর  দিতে  হোত  না।  কিন্তু  সরকার  জেলেদের  উপর  জলকর  বসালে  গরিব  জেলেরা  খুবই  অসুবিধায়  পড়লেন।  তাঁরা  রাসমণিকে  এসে  ধরলেন।  রাসমণি  কাশীপুর  থেকে  মেটিয়াবুরুজ  পর্যন্ত  গঙ্গা  বার্ষিক  ১০  হাজার  টাকায়  ইজারা  নিলেন  এবং  কর্মচারীদের  নির্দেশ  দিলেন,  বয়ায়  বয়ায়  নদীতে  যাতায়াতের  পথ  বন্ধ  করে  দিতে  যাতে  কোন  জাহাজ,  স্টিমার  বা  নৌকা  যাতায়াত  করতে  না  পারে।  পুলিশ  কৈফিয়ত  তলব  করলে  রাসমণি  উত্তর  দিলেন,  জাহাজ  ইত্যাদি  চলাচল  করলে  তাঁর  মাছ  নষ্ট  হয়।  পুলিশ  জোর  করে  পথ  খুলে  দিলে  তিনি  মামলা  জুড়ে  দেন।  এ  ব্যাপারে  তাঁর  অনেক  টাকা  খরচ  হলেও  শেষ  পর্যন্ত  সরকার  জলকর  তুলে  দেন।  যশোহরের  অন্তর্গত  মকিমপুরে তাঁদের   একটি  জমিদারি  ছিল।  সেখানে  নীলকর  সাহেবরা  নীলচাষিদের  উপর  খুবই  অত্যাচার  করতেন।  তার  বিরুদ্ধে  প্রজারা  বিদ্রোহ  করলে  রাসমণি  প্রজাদের  পক্ষে  সেখানে  লাঠিয়াল  পাঠিয়ে  নীলকর  সাহেবদের  অত্যাচার  থেকে  নিজের  প্রজাবর্গকে  রক্ষা  করেন।  একবার  তিনি  বারাণসী  তীর্থ  দর্শনের  মনস্থ  করলেন।  তখন  কাশী,  গয়া, বৃন্দাবন  ইত্যাদি  তীর্থ  ভ্রমণ  ছিল  দুরূহ  ব্যাপার।  ২৫ টা  বজরায়  ছ'  মাসের  উপযোগী  রসদ  মজুত  করা হল।  যাওয়ার  দিনক্ষণ  পাকা।  এমন  সময়  বাংলায়  দুর্ভিক্ষ  দেখা  দিল।  তিনি  কাশী  যাওয়ার  সংকল্প  পরিত্যাগ  করে  অনাহারক্লিষ্ট  নরনারীগণকে  আশ্রয়  দিলেন  ও  খাদ্যের  ব্যবস্থা  করলেন।  অন্য  মতে,  তিনি  স্বপ্নে  দেখেন,  অন্নপূর্ণা-বিশ্বেশ্বর  তাঁকে  কাশীতে  না  গিয়ে  দরিদ্রনারায়ণের  সেবা  করতে  আদেশ  দেন।  তাঁর  সবচেয়ে  উল্লেখযোগ্য  কাজ,  দক্ষিণেশ্বরের  কালীমন্দির  প্রতিষ্ঠা  ও  সেখানে  শ্রীরামকৃষ্ণকে  পূজারী  নিয়োগ  করা।  এই  মন্দির  প্রতিষ্ঠা  ও  নির্মাণ  করতে  তাঁর  ব্যয়  হয়  ৯  লক্ষ  টাকা।  নিত্যসেবার  জন্য  তিনি  ৫  লক্ষ  মূল্যের  সম্পত্তি  দেবত্তর  করেন।          

    রাজচন্দ্র-রাসমণির  কোন  পুত্রসন্তান  ছিল  না।  তাঁর  ছিল  চার  কন্যা -  পদ্মমণি,  কুমারী,  করুণাময়ী  ও  জগদম্বা।  পদ্মমণির  বিয়ে  হয়  সিঁথি  নিবাসী  রামচন্দ্র  দাসের  সঙ্গে।  করুণাময়ীর  বিয়ে  হয়  মথুর  মোহন  বিশ্বাসের  সঙ্গে।  বিয়ের  দু  বছরের  মধ্যে  করুণাময়ীর  মৃত্যু  হলে  রাসমণি  তাঁর  ছোট  মেয়ে  জগদম্বার  সঙ্গে  মথুরবাবুর  বিয়ে  দেন।  এখানে  উল্লেখ্য,  জগদম্বা  দেবী  উত্তর  ২৪  পরগণার  ব্যারাকপুরের  তালপুকুরে  শিবশক্তি  অন্নপূর্ণার  এক  নবরত্ন  মন্দির  প্রতিষ্ঠা  করেন  যা  দেখতে  হুবহু   দক্ষিণেশ্বরের  কালীমন্দিরের  অনুরূপ।  

              যদিও  রানি  রাসমণির  নামে  এ  বাড়ির  পুজো  পরিচিত  তবে  পুজো  শুরু  হয়  প্রীতরামের  আমলে।  তাঁর  মৃত্যুর  পর  তাঁর  পুত্র  রাজচন্দ্র  পুজো  করেন।  রাজচন্দ্রের  মৃত্যুর  পর  পুজোর  ভার  নেন  রানি  রাসমণি।  পরে  এখানে  আরও  দুটি  পুজো  শুরু  হয়।    প্রথম  পুজোটি  শুরু  হয়  ১৩ নং  রানি  রাসমণি  রোডে  অবস্থিত  ঠাকুর  দালানে।

            মথুর  মোহন  বিশ্বাসের  ছেলে  ত্রৈলোক্যনাথ  বিশ্বাস।  ত্রৈলোক্যেনাথের  চার  ছেলে।   শ্রীগোপাল,  মোহনগোপাল,  ব্রজগোপাল  ও  নিত্যগোপাল।  ত্রৈলোক্যনাথ  তাঁর  সেজ  ছেলে  ব্রজগোপালকে  ১৩ নং  রানি  রাসমণি  রোডের  বাড়িটি  দিয়ে  যান।  ব্রজগোপালের  স্ত্রী  সিন্ধুবালা  দাসী।  ব্রজগোপাল-সিন্ধুবালার  দুই  মেয়ে।  লাবণ্যলতা  ও  বিদ্যুৎলতা।  বিদ্যুৎলতার  শ্বশুরবাড়িতে  অপঘাতে  মৃত্যু  হয়।  লাবণ্যলতার  স্বামী  বিজয়  কৃষ্ণ  হাজরা।  তাঁদের  আট   ছেলে।  এখন  হাজরা  বংশ  এই  বাড়ির  অধিকারী।

             ২০  নং  রানি  রাসমণি  রোডে  অবস্থিত  বাড়িটি  জগদম্বার  অন্য  তিন  ছেলে  উত্তরাধিকারী  সূত্রে  পান।  তাই  এখন  বিশ্বাস  বংশ  এই  বাড়ির  অধিকারী।

          কুমারীর  স্বামী  প্যারিমোহন  চৌধুরী।  ১৮/৩এ,  এস. এন. ব্যানার্জী  রোডের  বাড়িটি  এখন  প্যারিমোহনের  বংশধরদের  অধিকারে।  পদ্মমণির  অংশে  কোন  পুজো  হয়  না।
             
 ২০  নং  রানি  রাসমণি  রোডে  অবস্থিত  ঠাকুর  দালান  ও  দুর্গা  প্রতিমার  ছবি ( ২০১৫ সালে  তোলা ) : 
ঠাকুর  দালান 

প্রতিমা - ১

প্রতিমা - ২

১৩ নং  রানি  রাসমণি  রোডে  অবস্থিত  ঠাকুর  দালান  ও  দুর্গাপ্রতিমার  ছবি ( ২০১৫  সালে  তোলা ) :
ঠাকুর  দালান  ( বাহির ) 

ঠাকুর  দালান ( ভিতর )


প্রতিমা 


১৮/৩ এ,  এস.  এন.  ব্যানার্জি  রোডে  অবস্থিত  ঠাকুর  দালান  ও   দুর্গা  প্রতিমার  ছবি ( ২০১৭ সালে  তোলা ) :
ঠাকুর  দালান

প্রতিমা - ১

প্রতিমা - ২


নীলমণি  দত্ত  ঠাকুরবাড়ি  /  Nilmani  Dutta  Thakurbari :  
৫৬ এ,  ডক্টর'স  লেন।  ( তালতলার  কাছে। )

দুর্গা  প্রতিমার  ছবি ( ২০১৭ সালে  তোলা ) :

প্রতিমা

ডঃ  প্রতাপ  চন্দ্র  চন্দ্রের  বাড়ি / Dr. Pratap Chandra Chandra Bari : 
 ২৩  নং  নির্মল  চন্দ্র  স্ট্রিট। ( গনেশ  চন্দ্র এভিনিউ  ও  নির্মল  চন্দ্র  স্ট্রিটের  সংযোগস্থলের  কাছে। )
  

সংক্ষিপ্ত  ইতিহাস :  ১৭৮১  সালে  এই  পরিবার  নদিয়া  জেলার  কোন  এক  গ্রাম  থেকে  কলকাতায়  আসেন।  প্রতাপচন্দ্রের  পিতা  নির্মল  চন্দ্র  জাতীয়  কংগ্রেসের  বাংলার  সদস্যেদের  মধ্যে  ছিলেন  অন্যতম।  প্রতাপ  চন্দ্র  কলকাতার  প্রেসিডেন্সি  কলেজ  থেকে  ইতিহাসে  প্রথম  শ্রেণীতে  প্রথম  স্থান  অধিকার  করে  B.A.(Hons )  ডিগ্রি  লাভ  করেন।  পরে  কলকাতা  বিশ্ববিদ্যালয়  থেকে  প্রথমে  LL.B  এবং  পরে  D.Phil  ডিগ্রি  লাভ  করেন।  পিতার  মত  তিনিও  ভারতের  জাতীয়  কংগ্রেসে  যোগ  দেন।  ১৯৬২-৬৮  পর্যন্ত  তিনি  পশ্চিম  বঙ্গ  বিধান  সভার  সভ্য  ছিলেন  এবং  ১৯৬৮  তে  পশ্চিম বঙ্গ  সরকারের  অর্থ  ও  আইন  দফতরের  মন্ত্রী  হন।  ১৯৭৭  থেকে  ১৯৭৯  তিনি  কেন্দ্রীয়  সরকারের  শিক্ষা  ও  সামাজিক  মঙ্গল-সাধন  দফতরের  মন্ত্রী  ছিলেন।  তিনি  পশ্চিম  বঙ্গ  হেরিটেজ  কমিশনের  প্রতিষ্ঠাতা  chairman  ছিলেন।  এছাড়া  তিনি  অনেক  পদ  অলংকৃত  করেছিলেন।  ১৮৭৭  সাল   থেকে  এই  বাড়িতে  দুর্গা  পূজা  শুরু  হয়।  
           
বাড়ির  ঠাকুর  দালান  ও  দুর্গা  প্রতিমার  ছবি ( ২০১৫ সালে  তোলা ) :
 
ঠাকুর  দালান

প্রতিমা - ১

প্রতিমা - ২
দত্ত  পরিবার  /  Dutta  Family : 
৬২,  হিদারাম  ব্যানার্জি  লেন।  ( নির্মল  চন্দ্র  স্ট্রিট  ও  বিপিন  বিহারী  গাঙ্গুলি  স্ট্রিটের  সংযোগস্থলের  কাছে। ) 

দুর্গা  প্রতিমার  ছবি ( ২০১৭ সালে  তোলা ) :

প্রতিমা
বিশ্বনাথ  মতিলাল  বাড়ি / Bishwanath Matilal House :
১/সি,  দুর্গা  পিথুরি  লেন। ( নির্মল  চন্দ্র  স্ট্রিট  ও  বিপিন  বিহারী  গাঙ্গুলি  স্ট্রিটের  সংযোগস্থলের  কাছে।  হিদারাম  ব্যানার্জি  লেন  ও  বিপিন  বিহারী  গাঙ্গুলি  স্ট্রিটের  সংযোগকারী  রাস্তা  দুর্গা  পিথুরি  লেন। )

সংক্ষিপ্ত  ইতিহাস :  বিশ্বনাথ  মতিলাল।  কৌলিক  পরিচয়ে   রাঢ়ীয়  ব্রাহ্মণ।  ছোট  বেলায়  বাবাকে  হারিয়ে  মায়ের  সঙ্গে  জয়নগর-মজিলপুর  গ্রাম  থেকে  এসে  উঠলেন  কলকাতায়  তাঁর  মামা  দুর্গাচরণ  পিথুরির  বাড়ি।  দুর্গাচরণ  ছিলেন  প্রখ্যাত  ব্যবসায়ী।  ইস্ট  ইন্ডিয়া  কোম্পানির  মাসিক  সাত  টাকা  বেতনের  চাকরিতে  ঢুকে  কোম্পানির  নিমক  মহলের  দেওয়ান  হন  মতিলাল।  মামার  কোন  ছেলে  ছিল  না।  তিনি  ভাগ্নে  কে  তাঁর  বসত  বাড়িটি  দান  করেন।  পত্রাকৃতি  তিন  খিলান  বিশিষ্ট  ঠাকুর  দালানে  দুশ   বছরেরও  বেশি  সময়  ধরে  চলে  আসছে  এই  পুজো।  একচালা  মহিষমর্দিনী  মূর্তি।  সিংহের  মুখ  অশ্বাকৃতি।  

দুর্গা  প্রতিমার  ছবি ( ২০১৭ সালে  তোলা ) :

প্রতিমা - ১

প্রতিমা - ২

ঠনঠনিয়া  দত্ত  বাড়ি  / Thanthania   Dutta  Bari : 
 ৩  নং  বিধান  সরণি।   ( কলেজ  স্ট্রিটের  কাছে। ) 

সংক্ষিপ্ত  ইতিহাস :  ১৮৫৫  খ্রীষ্টাব্দে  দ্বারিকা  নাথ  দত্ত  এই  বাড়িতে  দুর্গা  পুজোর  সূচনা  করেন।  তিনি  পাটের  ব্যবসা  করে  প্রচুর  অর্থ  উপার্জন  করেন।  দুর্গাপুজোয়  সংকল্প  করা  হয়  বাড়ির  মহিলার  নামে।  কথিত  আছে,  দ্বারকানাথ  যাঁকে  বিয়ে  করেন  তাঁর  গায়ের  রং  ছিল  কালো।  কিন্তু  তিনি  এই  বাড়িতে  পদার্পণ  করার  পর  থেকেই  দ্বারকানাথের  ব্যবসা  বহুগুণ  বৃদ্ধি  পায়।  তখন  থেকে  পুজোয়  বাড়ির  মহিলাদের  নামে  সংকল্প  করা  শুরু  হয়।  এখানে  মহিষমর্দিনী  মূর্তির  বদলে  শিবদুর্গা  মূর্তিতে  পুজো  হয়।  জন্মাষ্টমীতে  বাড়িতে  প্রতিমা  তৈরী  শুরু  হয়।  পুজোর  একটি  বিশেষ  অনুষ্ঠান  ধুনো  পোড়ানো।  বাড়ির  সধবা  ও  বিধবা  মহিলাদের  মাথায়  বিড়ার  উপর  জ্বলন্ত  মালসা  বসিয়ে  ধুনো  পোড়ানো  হয়।  কোন  পাক  করা  রান্না  দেবীকে  নিবেদন  করা  হয়  না।  নবমীতে  একজন  কুমারী  ও  একজন  সদবাকে  পুজো  করা  হয়।         

ঠাকুর  দালান  ও  দুর্গা  প্রতিমার  ছবি ( ২০১৫ সালে  তোলা ) :

ঠাকুর  দালান 

প্রতিমা - ১

প্রতিমা - ২

প্রতিমা - ৩

পটলডাঙা  বসুমল্লিক  বাড়ি  /  Pataldanga Basu Mallick Bari :
 
১৮  ও  ২২  নং  রাধানাথ  মল্লিক  লেন। 
(সূর্য  সেন  স্ট্রিটের  কর্পোরেশন অফিসের  কাছে। )

সংক্ষিপ্ত  ইতিহাস :এই  বংশের  প্রতিষ্ঠাতা  রাধানাথ  মল্লিক  ১৮, রাধানাথ  মল্লিক  লেনে  প্রথম  দুর্গা  পূজা  শুরু  করেন।  দক্ষিণ  রাঢ়ীয়  কায়স্থ  সমাজের  মাহিনগরের  বসু  তথা  কাঁটাগড়ের  বসু  মল্লিক  বলে  পরিচিত  এই  পরিবার  গোপীনাথ  বসুর  ( পুরন্দর  খাঁ )  উত্তরপুরুষ।  গোপীনাথ  ছিলেন  গৌড়ের  সুলতান  হুসেন  শাহর  উজির।  হুগলির  কাঁটাগড়  থেকে  রামকুমার  বসু  মল্লিক  ১৭৯৪  সালে  কলকাতায়  চলে  আসেন।  তিনি  সাবেক  পটলডাঙা  ( এখনকার  কলেজ  স্কোয়ার )  অঞ্চলের  কৃষ্ণরাম  আইচের  কন্যা  শঙ্করীকে  বিয়ে  করেন।  রামকুমার  ও  শঙ্করীর  পুত্র  রাধানাথ  পটালডাঙা  বসুমল্লিক  বাড়ির  আদি  পুরুষ।  রাধানাথ  জাহাজ  ও  অন্যান্য  ব্যবসা  করে  প্রচুর  অর্থ  উপার্জন  করেন।  ১৮৩১ -এ  সাবেক  ক্যাথিড্রাল  মিশন  লেনে  ঠাকুর  দালান  সহ  ভদ্রাসন  নির্মাণ  করে  বসবাস  শুরু  করে  দুর্গাপুজো  করেন।  পরে  রাস্তাটি  দুটি  ভাগে  ভাগ  হয়ে  রাধানাথ  মল্লিক  লেন  ও  শ্রীগোপাল  মল্লিক  লেন  নামে  চিহ্নিত  হয়।  পাঁচ  খিলান  বিশিষ্ট  দু'  দালানের  ঠাকুর  দালানটির  বর্তমান  ঠিকানা  ১৮,  রাধানাথ  মল্লিক  লেন।  বাইরের  দেওয়ালের  খিলানের  উপর  নকশা  ও  সারিবদ্ধ  ভাবে  গাঁথা  দশাবতারের  ছোট  ছোট  মূর্তি। বারবার  রঙের  প্রলেপে  তা  টেরাকোটা  না  পঙ্খের  বোঝার  উপায়  নেই।  রোয়াকের  সামনে  থামের  উপর  ঢালাই  লোহার  কয়েকটি  লাস্যময়ী  নারী  মূর্তি।   স্বদেশী  আন্দোলন  ও  ভারতের  স্বাধীনতা  সংগ্রামের  ইতিহাসে  এই  পরিবার  তথা  বাড়ির  ভূমিকা  উল্লেখযোগ্য।  প্রতিমা  একচালা  মহিষমর্দিনী  মূর্তি।  প্রতিমার  ডাকের  সাজ।  দুর্গা,  লক্ষ্মী,  সরস্বতীকে  বেনারসি  শাড়ি  ও  কার্তিক-গণেশকে  সিল্কের ধুতি  পড়ানো  হয়।  পুজোর  একটি  বিশেষত্ব  হল,  এখানে  বন্দুক  থেকে  গুলি  ছোড়ার  পর  এক  বিশেষ  ধরণের  তলোয়ার  দিয়ে  বলি  ( আখ,  চাল-কুমড়া  ইত্যাদি )  দেওয়া হয়।         

            পরে  তাঁর  এক  নাতি  ক্ষেত্রচন্দ্র  বসুমল্লিক  ২২  নং  রাধানাথ  মল্লিক  লেনে  পুজো  শুরু  করেন।  এই  বাড়ির  ঠাকুর  দালানটি  ঢালাই  লোহার  কারুকার্যে  সজ্জিত। 

            এই  পরিবারে  আর  একটি  পুজো  হয়  ৪৬,  শ্রীগোপাল  মল্লিক  লেনে  যার  সূচনা  করেন  শ্রীগোপাল  মল্লিক।     


১৮ নং  রাধানাথ  মল্লিক  লেন  বাড়ির  ঠাকুর  দালান  ও  দুর্গা  প্রতিমার   ছবি ( ২০১৫ সালে  তোলা ) :

ঠাকুর  দালান 

প্রতিমা - ১

প্রতিমা - ২


২২,  রাধানাথ  মল্লিক  লেন  বাড়ির  ঠাকুর  দালান  ও  দুর্গা  প্রতিমার  ছবি ( ২০১৫ সালে  তোলা ) :
ঠাকুর  দালান

প্রতিমা - ১

প্রতিমা - ২

শম্ভুনাথ  সেন  পরিবার / Shambhunath  Sen  Family :  
৩,  রাজা  রামমোহন  রায়  সরণি। ( Amherst  Street )
( Lady Dufferin Victoria Hospital -এর  কাছে। )

ঠাকুর  দালান  ও দুর্গা  প্রতিমার  ছবি ( ২০১৭ সালে  তোলা ) :

ঠাকুর  দালান

প্রতিমা

পটুয়াতলা  ব্যানার্জী  বাড়ি / Patuatola Banerjee Bari :
৮  ও  ৯/২,  পটুয়াতলা  লেন   কলেজ  স্কয়ারের  কাছে। ) 

৮,  পটুয়াতলা  লেন  বাড়ির  দুর্গা  প্রতিমার  ছবি ( ২০১৫ সালে  তোলা ) -

প্রতিমা - ১

প্রতিমা - ২

৯/২,  পটুয়াতলা  লেন  বাড়ির  দুর্গা  প্রতিমার  ছবি ( ২০১৫ সালে  তোলা ) :
প্রতিমা - ১

প্রতিমা - ২


নীলমণি  সেন  পরিবার  /  Nilmani  Sen's  Family : 
১৩০, বৈঠক  খানা  রোড, কলকাতা - ৯
( Amherst  St.  Post  Office - এর  কাছে  ডঃ  কার্তিক  বসু  স্ট্রিট।  এই  রাস্তা  ধরে  গেলে  ১৩০, বৈঠক  খানা  রোড  পাওয়া  যাবে। )

ঠাকুর  দালান  ও দুর্গা  প্রতিমার  ছবি ( ২০১৭ সালে  তোলা ) :

ঠাকুর  দালান

অভয়া  দুর্গা - ১

অভয়া  দুর্গা - ২

মানিকতলা  সাহা  পরিবার / Maniktala  Saha  Family :  
১২২ এ,  মানিকতলা  স্ট্রিট।  ( বিবেকানন্দ  রোডের  উপর  অবস্থিত  স্বামী  বিবেকানন্দ  মূর্তির  কাছে। ) 

ঠাকুর  দালান  ও দুর্গা  প্রতিমার  ছবি ( ২০১৭ সালে  তোলা ) :

ঠাকুর  দালান

প্রতিমা - ১

প্রতিমা- ২
গিরিশ  ঘোষের  বাড়ি /  Girish  Ghosh  Family :  
4,  Ghosh Lane,  Kol - 6.  বিবেকানন্দ  রোডের  যে  দিকে  মানিকতলা  স্ট্রিট  তার  বিপরীত  দিকে  ঘোষ  লেন।

ঠাকুর  দালান  ও দুর্গা  প্রতিমার  ছবি ( ২০১৭ সালে  তোলা ) :
ঠাকুর  দালান

প্রতিমা - ১

প্রতিমা - ২

মহেন্দ্র  নাথ  শ্রীমানী  বাড়ি  / Mahendra  Nath  Shrimani  House :

  ১৭,  মহেন্দ্র  শ্রীমানী  স্ট্রিট  ( Sukia  Street ),  কলকাতা - ৯  ( রামমোহন  লাইব্রেরির  বিপরীতে। )


ঠাকুর  দালান  ও দুর্গা  প্রতিমার  ছবি ( ২০১৭ সালে  তোলা ) :

ঠাকুর  দালান
প্রতিমা - ১

প্রতিমা - ২


হরিনাথ  মুখার্জী  পরিবার / Harinath  Mukherjee  Family : 
৪,  কালিদাস  সিংহ  লেন,  কলকাতা - ৯  ( রাজাবাজার  থেকে  কেশব  চন্দ্র  সেন  স্ট্রিট  ধরে  এগুলে  ডান  দিকে  কালিদাস  সিংহ  লেন  পড়বে। ) 

ঠাকুর  দালান  ও দুর্গা  প্রতিমার  ছবি ( ২০১৭ সালে  তোলা ) :

ঠাকুর  দালান

প্রতিমা

বেলেঘাটা  সরকার  বাড়ি  / Beleghata  Sarkar  Bari :

বেলেঘাটা  মেন  রোড।  (  বেলেঘাটা  জোড়ামন্দিরের  কাছে। )  এই  বাড়ির  প্রতিমার  বিশেষত্ব  হল  পটোলচেরা  ছোখ।   

দুর্গা  প্রতিমার  ছবি ( ২০১৭ সালে  তোলা ) :
প্রতিমা - ১

প্রতিমা - ২

দক্ষিণ  কলকাতা :


ভবানীপুর  মল্লিক  বাড়ি :
মোহিনী  মোহন  রোড ( নেতাজি  ভবন  মেট্রো  স্টেশনের  কাছে ),  কলকাতা। 

            সংক্ষিপ্ত  ইতিহাস :  বর্ধমানের  শ্রীখণ্ড  থেকে  এঁরা  প্রথমে  গুপ্তিপাড়া  ও  পরে  কলকাতার  ভবানীপুরে  বসতি  স্থাপন  করেন।  ১৯২৫  সাল  থেকে  ভবানীপুরের  বাড়িতে  দুর্গা  পূজা  হয়ে  আসছে।  এঁরা  আদতে  বৈষ্ণব।  তাই  পুজোতে  কোন  বলি  হয়  না।  ষষ্ঠী  থেকে  নবমী  পর্যন্ত  বাড়িতে  নিরামিষ  রান্না  হয়।  দশমীতে  প্রতিমা  নিরঞ্জনের  পর  এঁরা  আমিষ  খাবার  গ্রহণ  করেন।  আগে  পূজা  উপলক্ষে  যাত্রা,  কীর্তন,  থিয়েটার  ইত্যাদির  আসার  বসতো।  বাড়ির  লোকজন  ও  আত্মীয়রা  থিয়েটারে  অংশ  গ্রহণ  করতেন।  বাংলা  চলচিত্র-শিল্পী  রঞ্জিত  মল্লিক  ও  তাঁর  মেয়ে  কোয়েল  মল্লিক  এই  বাড়ির  সন্তান।    


সঙ্গের  ছবিগুলো  ২০১৮  সালের  সপ্তমীর  দিন  তোলা।


ঠাকুর  দালান 

প্রতিমা

প্রতিমার  সামনে  কোয়েল  মল্লিক

প্রতিমার  সামনে  বাবা  ও  মেয়ে

বাবা  ও  মেয়ে

কোয়েল  মল্লিক 

বিভিন্ন  ভঙ্গিমায়  কোয়েল - ১

বিভিন্ন  ভঙ্গিমায়  কোয়েল - ২

বিভিন্ন  ভঙ্গিমায়  কোয়েল - ৩


ভবানীপুর  দে  বাড়ি :26 / E  চন্দ্র  নাথ  চ্যাটার্জী  স্ট্রিট  ( নেতাজি  ভবন  মেট্রো  স্টেশনের  কাছে,  হরিশ  মুখার্জী  রোড  ও  আশুতোষ  মুখার্জী  রোডের  সংযোগকারী  রাস্তা ),  কলকাতা। 


সঙ্গের  ছবিগুলো  ২০১৮  সালের  সপ্তমীর  দিন  তোলা। 


প্রতিমা - ১

প্রতিমা - ২

প্রতিমা - ৩

সাবর্ণ  রায় চৌধুরী  বাড়ি / Sabarna Roy Choudhury Bari : 
( বড়িশা, সখেরবাজার। )

সংক্ষিপ্ত  ইতিহাস :  সাবর্ণ  রায়  চৌধুরী  পরিবারের  গোত্র  'সাবর্ণ'।  এই  বংশের  লক্ষ্মীকান্ত  মজুমদার  কর্মজীবন  শুরু  করেন  রাজা  বসন্ত  রায়ের  তত্ত্বাবধানে।  পরে  রাজা   প্রতাপাদিত্যের  দেওয়ান  হন।  হুগলি  জেলার  গোঘাটা-গোপালপুরে  লক্ষ্মীকান্তের  পিতা  কামদেব  গঙ্গোপাধ্যায়  ( ঘটকদের  ভাষায়  জীয়ো  গাঙ্গুলী )  বাস  করতেন।  গার্হস্থ্য  জীবনে  থেকেও  তিনি  সন্ন্যাসীর  মত  অনাসক্ত  ছিলেন  এবং  সর্বদা  তীর্থ  ভ্রমণ  করতেন।  কথিত  আছে,  তিনি  স্ত্রী  পদ্মাবতীকে  সঙ্গে  নিয়ে  ব্রম্ভচারীর  বেশে  কালীঘাটের  কাছে  এক  আশ্রম  নির্মাণ  করে  নিজ  ইষ্টদেবতার  সাধনায়  নিযুক্ত  ছিলেন।  এই  সময়  তাঁর  স্ত্রী  পদ্মাবতী  এক  পুত্র  সন্তান  প্রসব  করে  মারা  যান।  পত্নীর  মৃত্যুর  পর  তিনি  পুত্রকে  প্রতিবেশীদের  হাতে  সমর্পন  করে  কাশীধামে  গিয়ে  দণ্ডি  সন্ন্যাসী  হন।  মানসিংহ  যখন  সসৈন্যে  বঙ্গে  আসছিলেন  তখন  এই  কামদেব  ব্রহ্মচারীর  সঙ্গে  সাক্ষাৎ  হয়  এবং  মানসিংহ  তাঁহার  নিকট  শক্তিমন্ত্রে  দীক্ষিত  হন।  গুরুর  অনুরোধে  তাঁর  পুত্রের  সন্ধান  করবার  জন্য  স্বীকৃত  হন। 

            লক্ষীকান্ত  প্রতিবেশীদের  যত্নে  প্রতিপালিত  হয়ে  বসন্ত  রায়ের  অনুগ্রহে  প্রতাপাদিত্যের  রাজ  সরকারে  প্রবেশ  করেন  এবং  প্রতিভাবলে  দেওয়ানের  পদ  লাভ  করেন।  পরে প্রতাপাদিত্যের  পতনের  পর  মানসিংহের  সুপারিশে  জাহাঙ্গীর  বাদশাহের  নিকট  থেকে  কলকাতা  সহ  পাঁচ  পরগণার  সনদ  পান।  এই  বংশের  কেশবচন্দ্র ( কেশবরাম )  মজুমদার  মুর্শিদকুলি  খাঁর  সময়  রায়চৌধুরী  উপাধি  পান  এবং  তাঁর  জমিদারির  সুবিধার  জন্য  বড়িশায়  এসে  বাস  করেন।  তখন  থেকে  এই  পরিবার  বড়িশার  সাবর্ণ  রায়  চৌধুরী  নামে  খ্যাত  হয়।  কেশবের  পুত্র  শিবদেব  রায়ের  কাছে  কেউ  কিছু  চাইলে  তিনি  ফেরাতেন  না,  প্রত্যেকের  সন্তোষ  বিধান  করতেন।  তাই  তিনি  সকালের  কাছে  সন্তোষ  রায়  নামে  বেশি  পরিচিত  ছিলেন।  তিনি  কালীঘাটের  ক্ষুদ্র  মন্দির  (যেটি  বসন্ত  রায়  নির্মাণ  করে  ছিলেন )  ভেঙে  বর্তমান  মন্দির  নির্মাণ  করে  দেন।  ইস্ট  ইন্ডিয়া  কোম্পানি  আওরঙ্গজেবের  পৌত্র  বঙ্গাধিপ  আজিম  উশ্বানকে  ১৬০০০  টাকা  নজরানা  দিয়ে  যে  আদেশ  পান  সেই  অনুসারে  এই  বংশীয়  রামচাঁদ,  মনোহর  ও  রামভদ্র  রায়  চৌধুরীর  কাছ  থেকে  ১৩০০  টাকায়  কলকাতা  কিনে  নেয়।      

            এই  পরিবারে  বর্তমানে  মোট  আটটি  পূজা  হয়।  বড়িশাতে  হয়  ছয়টি।  আটচালার  পুজোটি  প্রাচীনতম।  আটটি  পরিবারেই  প্রতিমাই  'মঠচৌড়ি'  বা  তিন  চালির।          

  বড়  বাড়ির ( বড়িশা, সখেরবাজার ) দুর্গা   প্রতিমার  ছবি ( ২০১৫ সালে  তোলা ) : 

প্রতিমা - ১

প্রতিমা - ২

 মেজ  বাড়ি  ( সাবর্ণ  পাড়া,  কে. কে. রায়  চৌধুরী  রোড ,সখেরবাজার,  বড়িশা )  দুর্গা  প্রতিমার  ছবি ( ২০১৫ সালে  তোলা ) :
প্রতিমা - ১

প্রতিমা - ২
সাজের আটচালা বাড়ির 
  ( সাবর্ণ পাড়া, কে. কে. রায় চৌধুরী রোড , সখেরবাজার,  বড়িশা )  পূজা  মণ্ডপ  ও  দুর্গা  প্রতিমার  ছবি ( ২০১৫ সালে  তোলা ) :
পূজা  মণ্ডপ 

প্রতিমা 

     সহায়ক  গ্রন্থাবলী :
                  ১)  কলকাতার  বাবু  বৃত্তান্ত :  লোকনাথ  ঘোষ
                  ২)  যশোহর  খুলনার  ইতিহাস :  সতীশচন্দ্র মিত্র 
                  ৩) দ্বাদশ  নারী :  দুর্গাদাস  শর্মা 
                  ৪) জীবনী  সমগ্র  ( ২য়  ভাগ ) :  গণেশচন্দ্র  মুখোপাধ্যায়
                 ৫)  বনেদি  কলকাতার  ঘরবাড়ি :  দেবাশিস  বন্দোপাধ্যায়  

                                                                   
                                                  ****
                                                                                                                        

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন